মানব মৃতদেহ থেকে জৈব সার তৈরি
মানুষের মৃত্যুর পর মরদেহ বিভিন্ন ভাবে সৎকার করা হয়। কিন্তু এই মৃতদেহকে কাজে লাগিয়ে জৈব সার তৈরি করা হয়, তা অনেকেরই অজানা। হ্যাঁ, অবাক হলেও সত্যি যে, মৃতদেহকে জৈব সার তৈরির কাজে ব্যবহার করার আইন করা হয়েছে আমেরিকায়। এই আইন অনুযায়ী, আপনি মৃত্যুর পর নিজের শরীরকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরির নির্দেশ দিয়ে যেতে পারবেন। মানব শরীর দিয়ে এই কম্পোস্ট বা জৈব সার তৈরির অনুমতি দিয়ে একটি আইনের অনুমোদন করেছে ওয়াশিংটন রাজ্য। এখানকার সরকার জে ইনস্লে স্বাক্ষর করার পর বিলটি আইনে পরিণত হয়েছে।
মানব মৃতদেহকে সারে পরিণত করার প্রক্রিয়াটি এরমধ্যেই সুইডেনে আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। কোন বাক্স বা কফিন ছাড়া মৃতদেহ সমাধির প্রাকৃতিক সমাধি প্রক্রিয়া ব্রিটেনে আইনগত বৈধতা পেয়েছে। প্রচলিত রীতির কবর দেয়ার বিকল্প হিসেবে এই পদ্ধতিকে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে যেসব শহরে কবরস্থানের বা নতুন করে কবর দেয়ার সংকট তৈরি হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি বিকল্প সমাধান হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মাটির সঙ্গে মিশে মৃতদেহ সারে পরিণত হওয়ার পর, সেই মাটি তার প্রিয়জনদের দেয়া হবে, যাতে তারা ফুলগাছ, সবজির চারা বা বৃক্ষ রোপণ করতে পারেন।
আরো জানা যায়, বিলের পক্ষে আন্দোলনকারী ক্যাটরিনা স্পাড এএফপিকে বলেছেন, সাধারণ কবর দেয়ার বদলে এরকম মাটির সাথে মিশে যাওয়ার বিকল্প পদ্ধতি হবে প্রাকৃতিক, নিরাপদ, স্থায়ী এবং পৃথিবীর ভূমির ব্যবহার ও কার্বন নিঃসরণ কমাতে ভূমিকা রাখবে।
জৈব সার তৈরির পদ্ধতি
ছয় কোণ বিশিষ্ট একটি ইস্পাতের বাক্সে কাঠের টুকরো আর খড়কুটো দিয়ে মৃতদেহ রাখা হবে। এরপর সেই বাক্সটি বন্ধ করে দেয়া হবে। এক মাসের মধ্যে সেই মৃতদেহ পচে যাবে এবং মাটিতে পরিণত হবে। পরিবেশ-বান্ধব সমাধি প্রকৃতি দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
জানা গেছে, প্রয়াত অভিনেতা লুক পেরিকে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি ‘মাশরুম স্যুইটে’ সমাধিস্ত করা হয়েছে। এই স্যুইটের নির্মাতা জে রাইম লি বলেছেন, যখন কোন মৃতদেহ মাটিতে সমাধি দেয়া হয় বা পুড়িয়ে ফেলা হয়, তখন যে বিষাক্ত গ্যাস পরিবেশে মেশে, এই প্রক্রিয়ার ফলে সেটি কমে যাবে।