নিজের মেয়েকেই টিকিট দিল না রেলমন্ত্রী

আসন্ন ঈদে বাড়ি ফিরতে ঘরমুখো মানুষের টিকিট পেতে শুরু হয়েছে দৌড়–ঝাঁপ। তবে এবার ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট পেতে নিজের মেয়ে মন্ত্রীকে একটি তালিকা দিয়েছিলেন। মন্ত্রী সে তালিকা গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে।

আর মন্ত্রীর একান্ত সচিবের (পিএস) স্ত্রীর মাধ্যমে অনুরোধ এসেছিল টিকিটের বলেও জানিয়েছেন পিএস। তিনি সেটি প্রত্যাখান করেছেন। এমনকি পিএস তার অফিস কক্ষের দরজায় লিখেও রেখেছেন-‘এখানে টিকিটের সুপারিশ করা হয় না।’

বুধবার (২২ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হচ্ছে ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম। যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনা করে এবার ঢাকার পাঁচটি আলাদা স্থান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হবে।

এবিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে চাপ আমার উপর বেশি। কিন্তু আমাকে তো একটা সিস্টেমের ভেতর যেতে হবে। অনিয়মটাকে তো আর নিয়মে পরিণত করতে পারি না।’

এখন সচিবের কাছে তার নিকটাত্মীয় টিকিট চেয়েছেন। তিনিও ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে তারা এখন দু’জনই টিকিট সংক্রান্ত চাপে রয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, তার মেয়ের কাছে টিকিটের জন্য অনেক অনুরোধ এসেছে।

সে অনুযায়ি মেয়ে তার কাছে অগ্রিম টিকিট চেয়ে একটি তালিকা দিয়েছেন। নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমি বলে দিয়েছি এভাবে টিকিটের কোনো সুযোগ নেই। মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করলে এই অনুরোধের প্রয়োজন নেই।’

এদিকে মন্ত্রীর একান্ত সহকারি আতিকুর রহমানের কাছে এক নিকটাত্মীয় সিলেট যাওয়ার টিকিট চান। পিএস তাকে সকালে স্টেশনে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার পরামর্শ দেন। এরপর ওই আত্মীয় পিএসের স্ত্রীকে ফোন করেন।

তিনিও টিকিটের জন্য অনুরোধ করেন পিএসকে। পরে বাসায় ফিরে সেই আত্মীয়কে তার বোঝাতে হয়েছে যে এভাবে ফোন করে টিকিট জোগাড় করা অনৈতিক কাজ। এটি তার পক্ষে সম্ভব নয়।

প্রতিদিন এভাবে টিকিট দেওয়ার সুপারিশ প্রত্যাখান করতে করতে বহু বন্ধু-আত্মীয়-সহকর্মীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে বলে জানালেন আতিকুর রহমান।

প্রসঙ্গত, রেলপথ মন্ত্রণালয় এবার ঈদ টিকিট ঘোষণার আগেই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোন অনুরোধপত্র গ্রহণ করে টিকিট দেওয়া হবে না। মন্ত্রী বলেছেন, ‘টিকিট ব্লকিং আর চলবে না। বাংলাদেশ রেলওয়েতে দীর্ঘদিন ধরে ভিআইপি নামে টিকিট ব্লক করে রাখা হতো।

যা প্রভাবশালীরা অনুরোধপত্র দিয়ে নিতেন। এখন এটি পুরোপুরি বন্ধ করতে বলা হয়েছে, কেবলমাত্র মন্ত্রী সচিব, সিনিয়র সচিব, বিচারপতি, আইজিপি মর্যাদার মানুষ নিজে যদি ট্রেনে ভ্রমণ করেন তাহলে কেবল তারা টিকিট পাবেন, অন্যথায় নয়।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)