সাতক্ষীরার ভেটখালী খাদ্য গুদামের দুই প্রহরীর শাস্তিমূলক বদলি
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী খাদ্য গুদামের নিরাপত্তা প্রহরী মো. জিয়াউর রহমান ও মো. মশিউর রহমানকে প্রশাসনিক কারণে বদলি করা হয়েছে। বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে খাদ্য অধিদপ্তরের প্রশাসন বিভাগ থেকে তাদেরকে বদলি করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে ভেটখালী খাদ্য গুদামের ইট চুরি, দায়িত্বে অবহেলা, গুদামের জমি দখলকারী হুমায়ুনের সঙ্গে আঁতাত করে সরকারি জায়গা নতুন করে দখলের সহযোগিতা করার অভিযোগে বদলি করা হয়েছে বলে খাদ্য বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শ্যামনগর উপজেলার খাদ্য গুদাম বিভাগের একজন জানান, নিরাপত্তা প্রহরী জিয়াউর রহমান ২০১০ সালে উপজেলার নকিপুর খাদ্য গুদামে থাকাকালীন সময়ে তৎকালীন ওসিএলএসডির সহযোগিতায় ভেটখালী খাদ্য গুদামের ইট চুরি করে বাড়ী নিয়ে যায়। এছাড়া ভূমি দস্যু হুমায়ুন কর্তৃক নির্মিত দোকান থেকে প্রতিমাসে একটা অর্থ জিয়ার পকেটে আসতো। নিরাপত্তা প্রহরী জিয়া কালিগজ্ঞ উপজেলার বসন্তপুর খাদ্য গুদামে থাকাকালীন সময়ে গুদামের গাছ কাঁটা, গুদামের খোয়া চুরি ও ৬ মে.টন চাল চুরির দায়ে প্রশাসনিক কারণে মংলার জয়মণি ঘোলে বদলি হয়। অনেক দেনদরবার করে আবারও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভেটখালী গুদামে পদায়ন নেয়।
তিনি বলেন, সরকারি সম্পদ চুরি করে সে কোটি টাকার মালিক হয়েছে। অর্ধকোটি টাকা দিয়ে পুরাতন সাতক্ষীরা শহরে ৫ কাঠা জমি নিজের নামে ক্রয় করেছেন। এছাড়া এলাকায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে সুদের ব্যবসা করে। এলাকায় সুদখোর মহাজন হিসেবে তার পরিচিত। একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কিভাবে এত সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে তা বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন। অপর নিরাপত্তা প্রহরী মশিউর ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ভেটখালী গুদামে পদায়ন নিয়ে অফিস ফাঁকি দিয়ে বাড়িতে মুরগি পালন, গরুর খামার ও মাছ চাষ করে। তিনিও সুদে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
দুই নিরাপত্তা প্রহরীর বদলীর বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাহফুজ আলম বলেন, ভেটখালী খাদ্য গুদামের সরকারি জায়গার কিছু অংশ স্থানীয় হুমায়ুন নামের এক ব্যক্তি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন। বার বার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। সেই হুমায়ুনের সঙ্গে যোগসাজোশ করে নিরাপত্তা প্রহরী জিয়াউর রহমান ও মশিউর রহমান খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার নামে আদালতে মামলা করেছে। বিষয়টি রাষ্ট্রদ্রোহির সামিল। এসব ঘটনা খাদ্য অধিদপ্তর অবগত হওয়ার পর তাদের বরিশাল ও সিলেট বিভাগে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৭ মে তাদের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশনা পাওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর শ্যামনগর উপজেলা থেকে ছাড়পত্র দিয়ে বদলি হওয়া কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে।