দেবহাটার ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে বরাদ্দ ২০ কোটি টাকা
দেবহাটার রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২০ কোটি টাকা। সাতক্ষীরার ঐতিহ্যবাহী এ পর্যটন কেন্দ্রটি আরো সৌন্দর্য মন্ডিত ও নয়নাভিরাম করে গড়ে তুলতে ইতোমধ্যেই ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে পরিচালিত এ পর্যটন কেন্দ্রটির পরিকল্পিত সার্বিক উন্নয়ন ও তদারকি করছেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল গনি। দেবহাটার ঐতিহ্যবাহী রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি ইতোমধ্যেই জেলার গন্ডি পেরিয়ে পরিচিতি লাভ করেছে বাইরের জেলাগুলোতেও। বর্তমানে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চলেছে ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি উন্নয়নের কাজ। তবে এবারই প্রথম পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে এমন বড় অংকের অর্থাৎ ২০ কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। শীঘ্রই বরাদ্দকৃত অর্থে ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটির উন্নয়ন কাজ পুরোদমে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দেবহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যন আলহাজ্ব আব্দুল গনি। এজন্য রোববার বেলা ১১ টায় রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান তিনি। পরিদর্শনকালে দেবহাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শাওন, মুক্তিযোদ্ধা সাংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ইয়াছিন আলী, দপ্তর কমান্ডার আব্দুর রউফ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবুর আলী, ইউপি সদস্য গাজী শহীদুল্যাহ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বাপী সরদার সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল গনি বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মোতাবেক ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যেই নির্মাণ করা হয়েছে পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশের মুল গেট, পর্যটকদের ভ্রমণের ট্রেইল, আধুনিকায়ন করা হয়েছে লেক ও রেস্ট হাউজ। শিশুদের বিনোদনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে দোলনা, স্লিপিং ট্রেইল ও বিভিন্ন প্রকারের কৃত্রিম জীবযন্তু। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে উপজেলা সদর থেকে রুপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কাজ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি এ পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়নে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে যে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেটির সুষ্ঠ ব্যবহারের মাধ্যমে পর্যটন কেন্দ্রটিকে আরো আধুনিকায়ন ও উন্নত করে মানুষের চিত্ত বিনোদনের অন্যতম স্থান হিসেবে উপস্থাপন করা হবে বলেও জানান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল গনি।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ-ভারতের আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারনী ইছামতি নদীর ভাঙন রোধকল্পের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আ ন ম তরিকুল ইসলামের উদ্যোগে শিবনগর এলাকায় ইছামতির তীর ঘেষে লবনাক্ততা সহনশীল বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ,বনজ ও ঔষধি গাছের সারিবদ্ধ কয়েক হাজার চারা রোপনের মাধ্যমে ৩১.৪৬ একর জমিতে সুন্দরবনের আদলে সৃষ্টি করা হয় রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি। বর্তমানে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ভ্রমন পিপাসু পর্যটকদের পদচারণয় মুখরিত রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র। মাত্র কয়েক বছরেই গড়ে ওঠা বনটি নদী ভাঙন রোধ করে পরিবেশের ভারসম্য রক্ষার সাথে সাথে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মানুষের বিনোদনের খোরাকও জুগিয়ে আসছে।