তুষার মানবের পর সন্ধান মিললো আদিম মানুষের
তুষার মানবকে রীতিমত ভার্চুয়াল সহ পুরো দুনিয়াতেই হই হই পড়েছে৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, তাদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে রহস্যময় সেই প্রাণীর বিশালাকার পায়ের ছাপ৷ এসব নিয়ে সরগম বিশেষজ্ঞমহল৷ তারই মাঝে এলো আরো এক চমকপ্রদ তথ্য৷ তিব্বতের অত্যন্ত উঁচু স্থানে মানুষের আদিম একটি প্রজাতি ‘ডেনিসোভান’ বসবাসের প্রমাণ মিলেছে। এমন খবর জানিয়েছে বিবিসি৷
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চরম প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা একমাত্র বর্তমান মানব প্রজাতি- হোমো স্যাপিয়েন্সের সাথেই যুক্ত ছিল ‘ডেনিসোভান’৷ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক ম্যাগাজিন ‘নেচার’ প্রকাশ করেছে আদিমতম মানব প্রজাতি সম্পর্কে প্রতিবেদন৷ সেই ভিত্তিতে বিবিসি জানায়, ডেনিসোভানরা ছিল মনুষ্য প্রজাতিগুলোর মধ্যে একটি রহস্যময় প্রজাতি, যারা এখনকার আধুনিক মানুষের আগে এশিয়ায় বসবাস করতো। ধারণা করা হয়, হাজার বছর আগে তারা পৃথিবীর অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।
এর আগে সাইবেরিয়ার ডেনিসোভা গুহাতে পাওয়া জীবাশ্ম থেকে হাড় ও দাঁতের কিছু নমুনা থেকে ‘ডেনিসোভান’ প্রজাতি সম্পর্কে জানা যায়। আর ১৯৮০ সালে তিব্বতের মালভূমিতে ৩ হাজার ২৮০ মিটার উচ্চতায় একটি গুহাতে পাওয়া যায় ডেনিসোভা প্রজাতির নিচের চোয়ালের হাড়। পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, এই চোয়ালের হাড়গুলো প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার বছরের পুরনো৷ এরা মানবজাতির একটি আলাদা শাখা৷
জার্মানির নৃতাত্ত্বিক গবেষক জিন জ্যাকস হাবলিন জানিয়েছেন, ‘এটি একটি মালভূমি এবং অবশ্যই সেখানে বাস করার মতো প্রচুর সম্পদ ছিল, আর তারা শুধু মাঝে মাঝে আসতো এমনও নয়।’ তিনি বলেন, ‘যখন আমরা বর্তমান মানুষের আদি প্রজাতি নিয়েনডারথাল বা ডেনিসোভা নিয়ে গবেষণা করেছি তখন দেখা গেছে যে তাদের চরম পরিবেশে টিকে থাকার ক্ষমতা বেশি ছিলোনা।’
এই গবেষণাপত্রের অপর লেখক ডেনমার্কের ফ্রিডো ওয়েলকার বলেন, ‘আমাদের প্রোটিন বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া তথ্য বলে যে, নিচের চোয়ালের হাড়টি হোমিনিন গোত্রের কারো যারা ডেনিসোভা গুহা থেকে প্রাপ্ত ডেনিসোভানদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত ছিল।’ গবেষণা বলে দিচ্ছে মানব ইতিহাসের শুরুর দিকের কথা৷ এবার কি অন্যরকম মানুষ সম্পর্কে জানা যাবে৷ মুখিয়ে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷