কলারোয়ায় ইরি-বোরো মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা আর শ্রমিক সংকটে কৃষকরা
ধানকাটা শ্রমিক সংকটে পড়েছেন কলারোয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা। মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। দুলছে পাকা ধানের শীষ। তীব্র গরমে সেদ্ধ হচ্ছে প্রকৃতি। আবহাওয়া জানাচ্ছে ঝড়ের আভাস। এমন পরিস্থিতি কৃষকের বুক করছে দুরু দুরু। মাঠের ধান ঘরে তুলতে পারলেই যেন স্বস্তি পেতেন তারা। কিন্তু দেখা দিয়েছে শ্রমিক আকাল। পুরুষ শ্রমিক সংকট থাকায় নারী শ্রমিকরা নামছেন মাঠে। পুরুষের সাথে সমান তালে কাজ করছেন নারীরাও। কিন্তু মজুরি বৈষম্য রয়েছে পুরুষ ও নারী শ্রমিকের মধ্যে। ৫০০ থেকে ৬০০টাকায় মিলছে একজন পুরুষ শ্রমিক। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করছেন শ্রমিকরা। একজন নারী শ্রমিক পাচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০টাকা। মৌসুমে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। তেমনি আবহওয়ার পূর্বাভাস জানাচ্ছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা। সবমিলিয়ে কৃষকের দূরচিন্তার শেষ নেই। উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর এলাকার ব্রজেন পাল জানান- ধানকাটা মৌসুম শুরু হয়েছে আরও কয়েকদিন আগে। কিন্তু এখন ভরা মৌসুম। এই ভরা মৌসুমে মিলছে না শ্রমিক। আগে যারা ক্ষেত খামারে শ্রমিকের কাজ করতেন তারা এখন ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত ভ্যান, বরজে মোটা টাকা শ্রম বিক্রি করছে। গ্রামবাংলাসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। ফলে তারা এখন টাকা দিতে চাইলেও ক্ষেতে যেতে চান না। তাছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ায় বৈশাখে তপ্ত রোদে কেউ মাঠে শ্রমিকের কাজ করতে যেতে চান না। তিনি আরও বলেন- এলাকার শ্রমিকদের একটি অংশ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইটের ভাটায় কাজের সন্ধানে চলে গেছে। ফলে শ্রমিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে এলাকায়। জয়নগর এলাকার অনুপ দাস বলেন-এলাকার মাঠে মাঠে ঝুলছে পাকাধান। এ যেন সোনালী রঙের আলপনা। কিন্তু ধানের ক্ষেত দেখে প্রাণ জুড়ালেও বুক করছে দুরু দুরু ঝড়-বৃষ্টির আভাস শুনে, আর সেটা হলে তো সর্বনাশ। তাই বাড়ির সকল সদস্য মিলে নামতে হচ্ছে মাঠে। তিনি বলেন- পিতা, মাতা, ভাইসহ পরিবারের অন্যরাও এখন ধান কাটার কাজে ব্যস্ত। একই দৃশ্য দেখা যায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামে, প্রত্যেকের একই বক্তব্য শ্রমিক সংকট মজুরী ঊর্ধ্বমুখী, প্রাকৃতিক দুর্যোগের আভাস। সব মিলিয়ে কৃষক এখন চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছে।