শ্রীলংকায় হামলার মূল পরিকল্পনাকারীর ১৮ আত্মীয় নিহত
শ্রীলংকায় ইস্টার সানডেতে বোমা হামলার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী জাহরান হাশিমের পরিবারের অন্তত ১৮ জন সদস্য পুলিশি অভিযানের পর নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার বোন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করছেন নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে হয়তো তাদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে।
গেল ২১ এপ্রিল রোববার খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইস্টার সানডে উৎযাপনের সময় রাজধানী কলম্বো ও তার আশেপাশের এলাকা সমূহে তিনটি গির্জা ও চারটি হোটেলসহ আট জায়গায় প্রায় একযোগে সমন্বিত আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। এ হামলায় ২৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত ও পাঁচশতাধিক লোক আহত হয়। হামলার দু’দিন পর জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।
এ হামলার এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও দেশটিতে এখনও উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে এমনকি নতুন করে আরো হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে দেশটির কয়েকজন সংসদ সদস্যদ সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে জানিয়েছেন।
ইস্টার সানডের হামলার মূলহোতা হাশিমের বোন হাশিম মাথানিয়া। হামলার দিনে বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন জাহরান। পরে আইএসের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে হাশিমকে দেখা যায়।
সিএনএনের সঙ্গে আলাপকালে মাথানিয়া বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে ছিন্ন-ভিন্ন মরদেহের ছবি দেখে তার ভাইকে শনাক্ত করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘রোববারের হামলার পর থেকে আমার পরিবারের পাঁচ সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন। এর মধ্যে আমার তিন ভাই, বাবা ও আমার বোনের স্বামী রয়েছে।’
শুক্রবার দেশটির পূর্বাঞ্চলের সেইন্টহামারুথু শহরে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের সঙ্গে দেশটির পুলিশের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এতে ছয় শিশু, ১০ বেসামরিক নাগরিক ও ছয় সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন। পরের দিন ওই এলাকার একটি বাড়িতে কয়েকজনের ছিন্ন-ভিন্ন মরদেহ পাওয়া যায়। বিস্ফোরণে ওই বাড়ির ভবনের ছাদ উড়ে গেছে।
অভিযানে নিহত হয়েছে মাথানিয়ার স্বামীর ছোট ভাই মোহাম্মদ নিয়াস; যিনি দেশটির উগ্রপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী ন্যাশনাল তৌহিদ জামাতের সদস্য।
মাথানিয়া সিএনএনকে বলেন, নিহত নারী এবং শিশুদের মরদেহ দেখার পর আমি খুবেই কষ্ট পেয়েছি। যখন তারা আমাকে জানান যে, অভিযানে ছয় শিশু মারা গেছে। তখন আমি ধরে নিয়েছি যে, তারা আমার পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হতে পারে।
‘ওই বাড়িটিতে অভিযানে পাঁচজন নারী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে আমার তিন ভাইয়ের স্ত্রী, আমার ছোট বোন ও আমার মা রয়েছেন। এছাড়া তাদের সাত শিশু সন্তানও মারা গেছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সেইন্টহামারুথুর ওই বাড়িটিতে অভিযানের সময় একটি বিস্ফোরণ হয়। তারপর পুরো বাড়িতে আগুন ধরে যায়। মাথানিয়া বলেন, তার ভাই জাহরান হাশিমের স্ত্রী ও মেয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। লঙ্কান পুলিশও শুক্রবারের অভিযানের পর ওই বাড়ি থেকে একজন নারী ও এক শিশুকে উদ্ধারের পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।