৫-১ গোলে বিএনপির পরাজয়

৪৮ ঘণ্টার স্নায়ুযুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলো বিএনপি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বাকী ৫ জনই আজ শপথ নিলেন। বিএনপি পরাজিত হলো। বিএনপির একজন নির্বাচিত সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান জাহিদ শপথ নেওয়ার পর বিএনপিতে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। বিএনপির প্রধান লক্ষ্য ছিল বাকি ৫ জনের শপথ গ্রহণ ঠেকানো। এদের মধ্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে এই অবস্থায় শপথ নেবেন না এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকলেও বাকি ৪ জনকে নিয়ে সন্দেহ ছিল। বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা মনে করতেন যে এদের মধ্যে থেকে ৩জন যদি শপথ গ্রহণ করেন, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে তারা সংসদে থাকবে এবং তাদের জন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ হবে না। নির্বাচন কমিশনে তাদের বিরুদ্ধে দরখাস্ত করলেও কোনো লাভ হবে না। এজন্য বিএনপি গত ৪৮ ঘণ্টা মরিয়া হয়ে তাদেরকে শপথ গ্রহণ থেকে বিরত রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু রাজনীতিতে বিএনপির আরেকটি বিপর্যয় ঘটলো। বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া বাকি ৪ জনই আজ শপথ গ্রহণ করেছেন।

বিএনপির শীর্ষ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন,‘ দলের চেইন অব কমাণ্ড নষ্ট হবার কারণেই এটা হয়েছে।’ তিনি বলেন,‘দলের আদর্শের চেয়ে ব্যক্তিগত লাভকে তারা গুরুত্ব দিয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সরকারের সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে বিএনপির ৬জনের মধ্যে ৫জনই শপথ গ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তারা একাধিকবার বৈঠকও করেছিলেন। এমনকি সরকারের বিভিন্ন মহল এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছিলো। অন্যদিকে, গত শনিবার থেকেই বিএনপি অন্য ৫জন এমপি যেন শপথ গ্রহণ না করে সেজন্য তৎপরতা শুরু করে, তাদের বাসায় পাহারা বসানো হয়। ছাত্রদল, যুবদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদেরকে তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। একরকমভাবে তাদেরকে বন্দী করে রাখা হয়। অন্তত ২জন বিএনপির নির্বাচত সংসদ সদস্য বলেছেন, তাদেরকে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজ দুপুরের পরই শংকা কেটে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেয়ার পরেই তারা শপথ নিতে যান। এদিকে শপথ নেয়ার ঘটনা ছড়িয়ে পরার সাথে সাথে বিএনপির মধ্যে ক্ষোভে এবং হতাশা ছড়িয়ে পরে। দলীয় কর্মীরা স্থায়ী কমিটির সদস্যপদের পদত্যাগ দাবী করে স্লোগান দিতে থাকে।
এই শপথ গ্রহণের মাধ্যমে, আওয়ামী রীগের কৌশলের কাছে আরেকবার ধরাশয়ী হলো বিএনপি। বিএনপি এতোদিন ধরে নির্বাচনের ব্যাপারে যেসব অভিযোগ করে এসেছিলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৮ জনের মধ্যে ৭ জনের শপথ গ্রহণের মধ্যে দিয়ে সেই অভিযোগ অসার এবং যুক্তীহীন হয়ে গেল। এখন বিএনপির এমপিরা সংসদে থাকায় সরকারের পক্ষেও বলা সহজ হলো যে, জাতীয় সংসদে সব দলের অংশগ্রহণে গঠিত হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)