নুসরাত হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য সিরাজের জবানবন্দিতে
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা।
রোববার রাতে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।
পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল জানান, বিকেলে মামলার প্রধান আসামি সিরাজ উদ-দৌলাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
‘আগের ঘটনায় ব্যবস্থা নিলে নুসরাত হত্যাকাণ্ড এড়ানো যেতো’
এসপি ইকবাল জানান, জেলে নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম সিরাজের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি নুসরাতকে মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়ার জন্য বলেন। তাতে কাজ না হলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন সিরাজ।
১০ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে অধ্যক্ষ সিরাজের দশ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নুসরাত হত্যা মামলা তদন্তে সন্তুষ্ট হাইকোর্ট
সিরাজ উদ-দৌলাসহ নয়জন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি দেয়া অন্য আসামিদের মধ্যে নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ।
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা থেকে এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন নুসরাত। তাকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ২৬ মার্চ ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নুসরাতের মা। পরদিন অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নুসরাত হত্যা: কেরোসিন ঢালে জাবেদ, চেপে ধরে মনি
৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে দেয় নুসরাতকে। পাঁচ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা নুসরাত মারা যান।
যে বোরকা পরে শামীমসহ ঘাতকরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছিল, এরইমধ্যে তদন্তকারীরা তার একটি বোরকা খাল থেকে উদ্ধার করেছেন।
এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি করা হয় সিরাজ উদ-দৌলাকে। মামলার এজাহারভুক্ত আট আসামিসহ এখন পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। যাদের অধিকাংশই ওই মাদরাসার ছাত্র।
গ্রেফতাররা হলেন- অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, আবদুর রহিম ওরফে শরিফ, ইফতেখার হোসেন রানা, এমরান হোসেন মামুন, মহিউদ্দিন শাকিল, হাফেজ আবদুল কাদের ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ওই মাদরাসার সহ-সভাপতি রুহুল আমিন।