সাতক্ষীরা এখন পার করছে আলোকিত সময় : বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন সাংবাদিকতা পেশাকে একটি রীতিনীতির মধ্যে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে প্রচলিত আইনের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। তিনি আরও বলেন অপসাংবাদিকতা পরিহার করে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চেতনা ধারণ করতে হবে। এসব কারণে দেশের সাংবাদিকদের নিবন্ধনভূক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউসে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকরা স্বাধীনতা ভোগ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন এর অর্থ এই নয় যে যেকোনো মিথ্যা বিষয়কে সত্য হিসেবে তুলে ধরা। সাংবাদিকের স্বাধীনতা আইন ও সংবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মন্তব্য করে তিনি বলেন দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন রয়েছে নানা কারণে । তবে এই আইনের আওতায় কতকগুলি ধারা সাংবাদিকদের জন্য নিরাপদ নয় এই বিবেচনায় তা সংশোধন করা হবে।
তিনি সাংবাদিকদের হলুদ সাংবাদিকতা পরিহারের আহবান জানিয়ে আরও বলেন আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা অনেক সর্বনাশ ডেকে আনছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন অনলাইন পত্রিকা প্রকাশের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকবে। এমনটি হলে লেখাপড়া না জেনে যে কেউ একটি পত্রিকা খুলে সমাজের উপকারের বদলে ক্ষতি করতে পারবে না বলে জানান তিনি।
‘সাংবাদিকতায় আইন ও আচরণ বিধি’ বিষয়ক মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল। তিনি বলেন সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা সরকারের সব বিষয়কে ইতিবাচক ভাবে তুলে ধরে সমাজের কল্যাণ কাজ করছেন।তিনি আরও বলেন সাতক্ষীরা কিছুদিন অন্ধকার সময় পার করেছে , আর এখন পার করছে আলোকিত সময়। সমাজ সাংবাদিকদেরও বিচার করে জানিয়ে তিনি বলেন তারাও প্রশ্নের বাইরে নন। আমরা সবাই সব সময় বিচারের কাঠগড়ায় রয়েছি এমন মন্তব্য করে জেলা প্রশাসক বলেন ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে অনেক দুর এগিয়ে দেয়।
মত বিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রেসকাউন্সিল সচিব শাহ আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মো. ওমর ফারুক, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য খায়রুজ্জামান কামাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিস, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক সভাপতি মনিরুল ইসলাম মিনি, প্রথম আলোর কল্যাণ ব্যানার্জি, প্রেসক্লাব সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জ্বল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান , ভোরের কাগজের ড. দিলীপ কুমার দেব, দৈনিক দৃষ্টিপাতের আবু তালেব মোল্লা, একাত্তর টিভির বরুণ ব্যানার্জীসহ অন্যান্য সাংবাদিকরা।
ঢাকার সাংবাদিকরা সাংবাদিকতার এথিক্স মেনে চলার আহবান জানিয়ে বলেন হলুদ সাংবাদিকতা থেকে দুরে থাকতে হবে। পিআইবি সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে আর প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের আইন ও আচরণবিধি নিয়ে কাজ করে উল্লেখ করে তারা বলেন সাংবাদিকদের জন্য সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। তাদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা অবসর ভাতা পাবেন , তাদের জন্য পেনশন স্কীম চালু হবে এবং অন্যান্য সুবিধাও পাবেন বলে উল্লেখ করেন। তাদের জন্য আবাসন, বিদেশ ভ্রমণসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ চলছে। গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে জানিয়ে তারা আরও বলেন ডিজিটাল আইনের ৬৩ টি ধারার মধ্যে ৮ টি ধারা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য অনুকূল নয় জানিয়ে তারা বলেন তা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । মত বিনিময় সভায় সাতক্ষীরার সাংবাদিকরা তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বিভিন্ন সমস্যা ও দাবি তুলে ধরেন।