গ্যাসের অগ্নিকাণ্ড রোধে দুই ভাইয়ের অনবদ্য আবিষ্কার

গ্যাস লিকেজ থেকে দেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে অহরহ। এতে কেউ আহত হন; কেউবা আগুনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। সচেতনতা বাড়ালেও কমছে না গ্যাস লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। তবে এমন দুর্ঘটনা এড়াতে সহজ একটি যন্ত্রের আবিষ্কার করেছেন দুই ভাই। সিদরাতুল হাসিন ও সিদরাতুল তুশিনের আবিষ্কৃত যন্ত্রে মিলবে গ্যাস লিকেজ সমাধান। এতে ব্যয় হবে মাত্র ৩০০ টাকা।

চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে অধ্যয়নরত দুই ভাই তাদের এই উদ্ভাবনী যন্ত্রের নাম দিয়েছেন ‘গ্যাস লিকেজ সিকিউরিটি সিস্টেম’, যা মুহূর্তের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাসে লিকেজের উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধ করে দেবে। ঘরে ছড়িয়ে পড়া গ্যাস বের করে দিতে নিজ থেকেই খুলে যাবে দরজা-জানালা। শুধু তাই নয়, গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লাগলে সেটিও অনায়াসে নিভিয়ে দেয়া যাবে। এতে খরচ হবে মাত্র ৩০০ টাকা।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্টিফিক সোসাইটির উদ্যোগে সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ১ম সায়েন্স কার্নিভালে তাদের আবিষ্কৃত এ যন্ত্রের প্রদর্শন করা হয়। দুই ভাইয়ের মতো এমন ৪৫টি প্রজেক্ট এতে প্রদর্শিত হয়। কার্নিভালে ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

গ্যাস লিকেজ এড়াতে এমন যুগোপযোগী আবিষ্কারের বিষয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া সিদরাতুল হাসিন জানায়, গ্যাস লিকেজ হলে সেটির উৎস চিহ্নিত করতে গ্রেড বোর্ডের মাধ্যমে একটি সেন্সর যুক্ত করা হয়েছে। সেন্সরে গ্যাসের অস্তিত্ব মেলার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলার্ম বেজে উঠবে এবং এরজাস্ট ফ্যান চালু হবে। পাশাপাশি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘরের দরজা-জানালা খুলে যাবে। এতে গ্যাস লিকেজের ফলে ঘরে থাকা গ্যাসের পরিমাণ কমে যাবে। ফলে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি প্রায় শতভাগ হ্রাস পাবে।


ছবি: সংগৃহীত

শুধু তাই নয়, গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লাগালে তা নেভানোর বন্দোবস্ত রাখা রয়েছে দুই ভাইয়ের আবিষ্কৃত যন্ত্রে। আগুনের সূত্রপাত হলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চালু হবে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। তাৎক্ষণিকভাবে আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে জানায় ক্ষুদে বিজ্ঞানী হাসিন।

এর আগে বেলা ১১টায় কার্নিভালের উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতখোর উদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্টিফিক সোসাইটির সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম এজাজের সভাপতিত্বে এবং সদস্য ইশমাম আরাবী ও সাবরিনা আলমের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত এবং কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হানিফ সিদ্দিকী।

এছাড়া অনুষ্ঠানে সেমিনার বক্তা হিসেবে ছিলেন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-ফোরকান এবং একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক লায়লা খালেদা আঁখি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)