কালিগঞ্জের কলকলি খাল উন্মুক্ত করে দেওয়ায় চাঁদাবাজদের মাথায় হাত
লোনা পানিতে ফসলের ক্ষতি কে পুঁজি করে উচ্চ আদালতে একটি রিট কে কেন্দ্র করে কলকলি সরকারী খাস খালে পানি প্রবাহের বাধা সৃষ্টি করে কালিগঞ্জের একটি প্রভাবশালী মহল বছরের পর বছর এলাকাবাসীকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে উপজেলার রতনপুর ও ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন বাসী একত্রিত হয়ে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১২টার সময় খালের নেট পাটা অপসারণ করে শিবপুর সুইজগেটের ডালা খুলে পানি প্রবাহ উন্মুক্ত করে দেয়। খাল উন্মুক্তের খুশিতে দীর্ঘদিন জিম্মিদশা থেকে মুক্তিপেয়ে জাল নিয়ে খালে মাছ ধরতে নেমে পড়ে এলাকাবাসী। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় সরে জমিনে সাংবাদিকরা কলকলি খালে গেলে এমনই চিত্র উঠে আসে সাংবাদিকদের ক্যামেরায়। আড়ংগাছা গ্রামের মৃত জহুর আলীর পুত্র কেরামত আলী, রতনপুর গ্রামের মেছের আলী গাজীর পুত্র জহুর আলী গাজী, শিবপুর গ্রামের রোহান, শাহাজালাল, সিদ্দিক উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান অনেক বছর পর জাল নিয়ে সরকারী খাস কলকলি খালে মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে সরকার বাহাদুর কে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা করছে। বাপদাদারা এই খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। কিন্তু আমরা জাল দোড়া ঘরে বন্দি করে রেখেছি দীর্ঘদিন ধরে। রতনপুর ও ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের শহিদুল ইসলাম, জাহিদুল নবী মুন্না, যতিন দেব বর্মণ, মুনসুর সরদার, মতিউর রহমান, মেম্বর ফজলুর রহমান, আব্দুল মজিদ, আশরাফ হোসেন, ফরিদ উদ্দীন সহ শত শত এলাকাবাসী জানান কালিগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী কালিন্দী নদীতে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫নং পোল্টারের অধীনে শীবপুর, সুইজ গেট দিয়ে প্রায় ১৩ একর জমিতে দীর্ঘ কলকলি খাল পানি ওঠা নামা করে। উক্ত খালের পানি দিয়ে রতনপুর, ধলবাড়িয়া, ইউনিয়নের শিবপুর, মুড়াগাছা, আড়ংগাছা, মাদকাটী, গোয়াল পোতা, আব্দুলখালী, মাছরাঙা, টুপদিয়া, টেংরামারী, খুব্দপুর, গড়িইমহল, মহিষকুড়, রতনপুর, খড়মী, সহ আশেপাশের গ্রামের হাজার হাজার প্রান্তিক চাষী এবং বড় মৎস্য ঘের মালিকরা নদীর মৌসুমি পানি নিয়ে ফসল উৎপাদন সহ মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। এলাকার একটি প্রভাবশালী কুচক্রী মহল যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে সেই দলের ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতাদের মোটা অংকের টাকায় ম্যানেজ করে কলকলি খাল অবৈধ ভাবে দখল করে পানি প্রবাহ বন্দ করে দেয়। এলাকার সাধারণ মানুষ কে জিম্মি করে প্রান্তিক চাষি এবং মৎস্য ঘের মালিকদের নিকট হতে পানি দেওয়ার নাম করে বিঘা প্রতি বছরে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে আসছিল বলে এলাকাবাসী জানান। এই সুযোগে সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুরত আলীর ভাই আনসার আলী এবং গোলাম রব্বানী প্রায় ১০ বিঘা খাস খাল অবৈধ ভাবে দখল করে বছরের পর বছর মাছ চাষ করে ভোগ দখল করে আসলেও দেখার কেউ নাই। এই সুযোগে কলকলি খালের দুই ধারে অবৈধ দখলদাররা বাড়ি ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যানদের জানানো হলেও এর কোন প্রতিকার হয়নি। আমরা এলাকাবাসী ঐ সমস্ত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে উপজেলা সদরে মিছিল সমাবেশ ও প্রতিবাদ করে কোন লাভ হয়নি। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রভাবশালী কুচক্রী মহল লোনা পানি উত্তোলনের দোহাই দিয়ে থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ উক্ত আদালতে একটি রিট দায়ে করে এলাকা বাসীকে বছরের পর বছর ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে দুই ইউনিয়ন বাসী গতকাল একত্রিত হয়ে শিবপুর সুইজ গেট খুলে কলতলি খাল উন্মুক্ত করে দেয়।