সীমান্ত দিয়ে বানের পানির মত আসছে ভারত থেকে ফেনসিডিল
বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বেনাপোল সীমান্তের ফেনসিডিল ব্যবসায়ীরা। ঢাক ডোল বাজিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য, যশোর পুলিশ সুপার, শার্শা বেনাপোল পোর্ট থানার ইনচার্জসহ মাদক মুক্ত সীমান্ত করা হবে বলে ঘোষণা দিলেও সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় মাদক ব্যবসা আশঙ্কা জনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বানের পানির মত আসছে ভারত থেকে ফেনসিডিল ও মাদক। কোন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সীমান্তের ওপার থেকে আসা ফেনসিডিল সহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। প্রতিদিন সীমান্তের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কিছু ফেনসিডিল সহ অন্যান্য মাদকের চালান আটক করলেও এর বড় অংশ চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়।
স্থানীয় সূত্র জানায় বেনাপোল পোর্ট থানার বারোপোতা গ্রামের বুটকেল, রেজা, মুকুল ভারত থেকে ফেনসিডিলের বড় বড় চালান এনে থাকে। এরা দৌলতপুর ও পুটখালী সীমান্ত দিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ওপার থেকে হাজার হাজার বোতল ফেনসিডিল এনে থাকে। এদের বহনকারী দুই একজন মাঝে মধ্যে ধরা পড়লেও বড় অংশ চলে যায় বিভিন্ন রুট দিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অ লে। তবে সূত্র দাবি করে বলে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায়ও পাচার হয়ে আসে মাদক।
এদিকে এসব মাদক ব্যবসার সাথে আবার যুক্ত রয়েছে থানার ক্যাশিয়ার নামে কয়েকজন পাবলিক। বেনাপোল পোর্ট থানায় দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত আমির ওরফে কোটি পতি আমির ওরফে জামাই আমির থানার স্লিপ বিক্রি করে থাকে বলে একাধিক সূত্র জানায়। যশোর বেনাপোল রুটে তিনটি থানায় তিনজন ক্যাশিয়ার নিয়োগ আছে অলিখিত ভাবে। এর মধ্যে শার্শা থানায় আছে আলী, ও ঝিকরগাছা থানায় দেলোয়ার নামে একজন ক্যাশিয়ার নিয়োগ রয়েছে পুলিশের মাসিক, সাপ্তাহিক স্লিপ বিক্রি করার কাজে।
বেনাপোল থানার ক্যাশিয়ার আমির ওরফে জামাই আমিরও নিজে চোরাচালানি ব্যবসার সাথে জড়িত। তিনি ভারত থেকে পাসপোর্টের মাধ্যমে কাস্টসম এর যোগসাজসে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নিয়ে আসে শাড়ি থ্রিপিস, ওড়না সহ নানান ধরনের গামেন্টস পণ্য। অপরদিকে দৌলতপুর সীমান্তের তেরঘর নামক স্থান থেকেও নিয়ে আসে একই ধরনের পণ্য। এছাড়া জামাই আমিরের নিয়োগকৃত থানার স্লিপ বিক্রির কাজেও নিয়োজিত রয়েছে সীমান্তে একাধিক লোক। শার্শা থানার ক্যাশিয়ার আলী হোসেনকে স্লিপ বিক্রি করতে মাঝে মধ্যে বেনাপোলও দেখা যায়।
এ ব্যাপারে কথিত বেনাপোল পোর্ট থানার ক্যাশিয়ার আমির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের মত স্লিপ বিক্রি হয় না। খুব অসুবিধার মধ্যে আছি। একই সুরে কথা বলেন শার্শা থানার ক্যাশিয়ার আলি হোসেন। তিনি বলেন থানার টার্গেট পুরুন করতে পারছি না। ইদানীং স্লিপ খুব কম বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে বেনাপোলের পুটখালী এলাকায় প্রায় প্রতিদিন কমবেশী ফেনসিডিলের চালান ধরা পড়ছে। গত ১৪ এপ্রিল পুটখালী বিজিবি সদস্যরা নাছির নামে এক ফেনসিডিল ব্যবসায়িকে ১৯৫ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক করে। ১০ এপ্রিল পৃথক অভিযানে জাহিদ হোসেনকে ৬৬৮ বোতল ও নুরুজ্জামানকে ১৮০ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক করে। ৯ এপ্রিল ২০ বোতল মদ সহ আটক করে ফজলু নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে।
বেনাপোাল পোর্ট থানার পুটখালী ক্যাম্পের সুবেদার লাভলুর রহমান বলেন আমরা, মাদকের বিষয় সচেতন। যাকে মাদক সহ আটক করি তার নিকট থেকে মালিক সহ কথা বের করে মামলা দিয়ে থানায় চালান করে থাকি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, সীমান্ত পার হওয়া ফেনসিডিল, মদ ও গাজার বড়[ বড় চালান বিজিবি আটক করলেও আটক করছে না পুলিশ। কারণ থানার মাসিক, সাপ্তাহিক স্লিপ থাকে চোরাচালানিদের কাছে।