বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর কাড়ল বাংলাদেশের সংসদ ভবন

জাতিসংঘের সদর দফতরে ‘দ্বীপ থেকে দ্বীপে- লুই আই কানের সৃজনশীল পদচারণা’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও এস্তোনিয়া স্থায়ী মিশনের যৌথ উদ্যোগে এ চিত্র প্রদর্শনী হয়েছে। এতে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জাতীয় সংসদ ভবনের একটি মডেল, যা নজর কেড়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।

স্থপতি ও চিত্রগ্রাহক আর্নে ম্যাসিকের পরিকল্পনায় সোমবার এ চিত্র প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনের চিত্রের পাশপাশি এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের বিখ্যাত স্থাপত্যসমূহের বিভিন্ন চিত্র।

মঙ্গলবার জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

প্রদর্শনীতে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি কারস্টি কালজুলেইড, বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মারিয়া ফার্নান্দে এস্পিনোসা গার্সেজ এবং লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল কান, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, এস্তোনিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি সিভেন জুরগেনসনসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক ও জাতিসংঘের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী ভাষণে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থপতি লুই আই কান এবং তার অমর সৃষ্টি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনাসমূহকে স্মরণ করছি। ভাবতে অবাক লাগে, এস্তোনিয়ায় জন্মগ্রহণকারী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা একজন স্থপতি এত দূরের একটি দেশে গিয়ে কীভাবে এমন অনুপম স্বাক্ষর রেখে গেলেন? নিশ্চিতভাবে এটি ছিল তার হৃদয়সৃষ্ট একটি পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই উত্তর-দক্ষিণের বন্ধুত্বের এক অবিনাশী স্মারক। এ স্থাপত্য বাংলাদেশ ও এস্তোনিয়ার মধ্যে সৃষ্টি করেছে অটুট বন্ধুত্বের বন্ধন।

প্রতিমন্ত্রী জাতীয় সংসদ ভবনের বিভিন্ন তথ্যও উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংসদ ভবন এবং একটি স্থাপত্যের বিস্ময়। এতে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় উপকরণ। নকশায় তুলে ধরা হয়েছে আবহমান বাঙালি স্থাপত্যধারা। যেখানে কৃত্রিম লেকের মাধ্যম দেখানো হয়েছে নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।

যুক্তরাষ্ট্রের সেরা স্থাপত্য সমালোচক ম্যাকক্যার্টারের উদ্ধৃতি তুলে করে তিনি বলেন, এ ভবন বিংশ শতকের অন্যতম সেরা স্থাপত্য ভাস্কর্য।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি বিভিন্ন সভ্যতা ও যুগের স্থাপত্যকর্মের মেলবন্ধনের একটি অনন্য নিদর্শন হলেও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এ নকশার শিকড় গভীরভাবে প্রোথিত।

প্রতিমন্ত্রী স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে বলেন, এই ভবন স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীকে পরিণত হয়েছিল, যেমনটি ভেবেছিলেন কান। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি শুধু সংসদ ভবনই নয়, এটি স্থিতিশীলতা, মর্যাদা ও জাতির গর্বের প্রতীক।

বাংলাদেশের সংসদ ভবনকে লুই আই কানের অন্যতম সেরা স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করে এস্তোনিয়ার রাষ্ট্রপতি কারস্টি কালজুলেইড বলেন, কানের সৃষ্ট ভাস্কর্যসমূহ ন্যায়, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতীক; যার জন্য জাতিসংঘ কাজ করছে।

লুই আই কানের ছেলে ন্যাথানিয়েল কান তার বাবার স্থাপত্যকর্মের দর্শন ‘মানবীয় ঐকমত্য’র কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকের পৃথিবীতে এটি বড়ই প্রয়োজন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)