জেনে নিন কালো চালের উপকারিতা

আমাদের পাহাড়ে পাওয়া যায় কালো ধানের কালো চাল। রান্না করলে সে চালের ভাতও কালো হয়। তবে খানিকটা আঠালো। কাঠি দিয়ে খেতে সহজ। হাত দিয়েও খাওয়া যায়। এ জাতের চালের নাম কালো চাল। কালো চালের পুষ্টিমান নানা দিক থেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে বাদামি বা লাল চালকেও।

পুষ্টি বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, কালো চালের ভাত সাদা ভাতের চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টি সমৃদ্ধ, স্বাস্থ্যকর এবং কালো চালের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেক বেশি। বিশেষ করে ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে কালো চাল অনন্য। এ চাল সাদা চালের মতো নানা প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয় না বলে এর উপকারিতা অনেক পাওয়া যায়। একদিকে এ চালে শর্করার পরিমাণ সাদা চালের চেয়ে কম, অন্যদিকে আঁশ ও ভিটামিন বি-এর পরিমাণ বেশি।

Kalo-chal

কালো চালের পুষ্টিগুণ

কালো চালে এন্টিঅক্সিডেন্ট আছে প্রচুর, আছে আয়রন। আমিষের পরিমাণ অন্যান্য চালের চেয়ে প্রায় ৮.৫ ভাগ বেশি। পানিতে দ্রবীভূত অ্যান্থোসায়ানিন মূলত এর কালো বর্ণের জন্য দায়ী।

এসব চালে চিনির পরিমাণ খানিকটা কম। তবে রয়েছে বাড়-বাড়তির আঁশ। সে আঁশ হৃদরোগের সৃষ্টির ঝুঁকি হ্রাস করে বলে তথ্য দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। এ চালে রয়েছে ভিটামিন ‘ই’। এটি আর একটি এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান।

সাদা চাল না কালো চাল?

যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা খাদ্যতালিকা থেকে ভাতকে একেবারেই বাদ দিয়ে দেন! কিন্তু এশিয়ার বাসিন্দারা যেহেতু বহুকাল ধরে ভাত খেতে অভ্যস্ত, তাই এথেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে নেয়াটাও বোকামি। পুষ্টিবিদরা বলেন, কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত হয়ে গেলে কিছু সমস্যা হয়।

ধবধবে সাদা চালের দেখতে সুন্দর ভাতে পুষ্টিগুণের কিছুই প্রায় অবশিষ্ট থাকে না অতিরিক্ত পালিশ করার ফলে। কিন্তু ঢেঁকি ছাঁটা লাল চাল বা কালো চালের ভাত খেতে তো ভালোই, নানা পুষ্টিগুণেও তা সমৃদ্ধ।

Kalo-chal

সাদার চেয়ে কালো চালে ক্যালোরির পরিমাণ কম, উল্টো পাওয়া যায় উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। ফ্ল্যাভোনয়েড ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের কারণে নানা রোগের সঙ্গে যোঝার ক্ষমতা তৈরি হয় শরীরের, মস্তিষ্ক সুস্থভাবে কাজ করতে পারে। শরীরে কোনো প্রদাহ থাকলে তাও কমিয়ে দেয়। সুস্থ রাখে হৃদয় আর লিভার, কমায় অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা। এটি গ্লুটেন-মুক্ত ও হজম সংক্রান্ত গোলমালে যারা ভুগছেন, তারাও নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।

কালো চালের ভাত রান্নার কিছু টিপস

*কালো চালের ভাত রান্না হতে একটু বেশি সময় লাগে, তাই আগের রাত থেকে ভিজিয়ে রাখুন।

Kalo-chal

*রান্না হতে মোটামুটি আধঘণ্টার মতো সময় লাগে এবং রান্নার পর গাঢ় বেগুনি বর্ণ ধারণ করে কিছু প্রজাতির কালো চাল। কিছু কালো চাল দিয়ে পায়েসও রান্না করা যায়, চমৎকার বেগুনি বর্ণ ধারণ করে সেই পায়েস।

*যতটা চাল, তার দ্বিগুণ পানি দিতে হয় সাধারণত। তবে যারা মাড় বাদ দিয়ে ভাত খেতে অভ্যস্ত, তারা আরও একটু বেশি পানি দিতে পারেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)