বাগেরহাটে জেন্ডার ও গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মশালা
বাগেরহাট ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত নারী-পুরুষ বিভিন্ন কারণে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। এই বাস্তবতায় বিচারিক সেবাকে সবার জন্য সহজগম্য করতে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনায় অ-আনুষ্ঠানিক ও আধা-আনুষ্ঠানিক বিচারিক প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে গ্রাম আদালত শক্তিশালী করার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। গ্রাম আদালত কিভাবে নারী-বান্ধব করা যায় তা নিয়ে বুধবার সকালে বাগেরহাটজেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেন্ডার ও গ্রাম আদালত বিষয়ক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সচেতনতামূলক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো: জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: কামরুল ইসলাম, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মোঃ ছানা উল্ল্যাহ, ইউএনডিপির জেন্ডার স্পেশালিষ্ট কামরুন্নেসা নাজলী, ইউএনডিপির ডিসট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর মহিতোষ কুমার রায় প্রমুখ। বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় বাগেরহাট জেলার ৬ টি উপজেলায় ৪২ টি ইউনিয়নে কাজ চলছে।
কর্মশালা থেকে জানানো হয়, গ্রামীণ সাধারণ মানুষ তথা দরিদ্র নারী, অনগ্রসর ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য বিচার প্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করতে তথা স্থানীয় বিচার ব্যবস্থা সুদৃঢ় ও টেকসই করতে মাঠ পর্যায়ে গ্রাম আদালত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নারী ও অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রবেশাধিকার সহজ করা এবং গ্রাম আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় নারীর প্রতিনিধিত্বমূলক অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা এ প্রকল্পের লক্ষ্য। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় জেলার ৬টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক সহ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিসহ ৬০ জন অংশ নেন। দাতা সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়ন,ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, জুলাই ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় প্রকল্পভুক্ত ৪২ টি ইউনিয়নে ২৬২০ টি মামলা দায়ের হয়েছে যার মধ্যে ১৯০ টি মামলা উচ্চ আদালত থেকে প্রেরিত। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ১৮২৫ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে মোট ১ কোটি ৭৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। নারীরা যাতে বিচারপ্রার্থী হিসেবে গ্রাম আদালত থেকে হয়রানিমুক্ত হয়ে বিচার পেতে পারে, বিচারক প্যানেলে যাতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায় এবং সর্বোপরি একটি নারী বান্ধব বিচারিক পরিবেশ নিশ্চিত করা জন্য কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সকলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।