যেভাবে বেঁচে গেলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি কেন্দ্রীয় মসজিদে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ জন। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ বলছে এই হামলার পেছনে আরও অপরাধীরা জড়িত থাকতে পারে।

নিউজিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শেষে সেখানেই নামাজের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অল্পের জন্য তারা বেঁচে যান।

ঘটনার পর পরই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা হোটেলে ফিরে আসেন। তাদের এখন হোটেল থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। আগামীকাল শনিবার এ হেগলি ওভাল মাঠে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড তৃতীয় টেস্ট হওয়ার কথা ছিল কিন্তু ম্যাচটি সমঝোতার ভিত্তিতে বাতিল ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

ক্রাইস্টচার্চ শহরের আল নুর মসজিদে বন্দুকধারীর এই হামলায় অনেকেই নিহত হয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এতে ছয়জন নিহত হয়েছেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে এখনো কিছু বলা হয়নি।

এই ভয়াবহ ঘটনা থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের মুখপাত্র জালাল ইউনুস সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘বাসে করে দলের বেশিরভাগ সদস্যই মসজিদে গিয়েছিলেন এবং যখন হামলার ঘটনাটি ঘটে, ঠিক তখনই তারা মসজিদের ভেতর প্রবেশ করতে যাচ্ছিলেন।’

কিন্তু ভেতরে গোলাগুলির শব্দ শুনে দলের সদস্যরা সেখান থেকে নিরাপদে সরে আসেন। দলের কোনো সদস্যই এ ঘটনার মধ্যে পড়েননি।

জালাল ইউনুস আরো বলেন, ‘দলের সদস্যরা নিরাপদে আছেন। কিন্তু মানসিকভাবে তারা হতবাক। আমরা তাদের হোটেল থেকে বের না হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’

আল নুর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। তিনি হোটেলে ফিরে টুইট করেছেন। টুইটবার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমাদের পুরো দল বন্দুকধারীদের কাছ থেকে নিরাপদ ছিল।’

এ ঘটনাকে একটি ভয়ানক অভিজ্ঞতা বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ দলের এই ক্রিকেটার এবং দেশবাসীর কাছ থেকে দোয়া চেয়েছেন।

সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম লিখেছেন, ‘ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলার সময় আল্লাহ আজ আমাদের রক্ষা করেছেন… আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান।’

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্রাইস্টচার্চের শহরতলি লিনউডের মসজিদেও সশস্ত্র পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। হেগলি পার্ক এলাকা ও আশপাশের লোকজনকে বাড়ি থেকে বের হতে মানা করা হয়েছে। এ পার্কের সামনের ডিয়েন এভিনিউয়ে আল নুর মসজিদটি অবস্থিত।

পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বিবিসিকে বলেছেন, এখানে ভয়ানক ঘটনা ঘটেছে।  সেখানকার স্কুল ও চার্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গোটা এলাকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। আকাশে হেলিকপ্টার টহল দিচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, তারা সেখানে কয়েকটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেছেন। কিছু লোকজনকে আহত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে হতাহতের বিষয়টি এখনো পুলিশ বা শহর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মোহন ইব্রাহিম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী নিউজিল্যান্ড হ্যারাল্ডকে বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, বৈদ্যুতিক কোনো বিভ্রাটের কারণে বোধ হয় এ রকম শব্দ হচ্ছে। কিন্তু পরক্ষণেই দেখলাম, লোকজন দৌড়াতে শুরু করেছে। সেখানে আমার এক বন্ধুও ছিল। তাকে ডাকলেও কোনো সাড়া পাইনি। আমি তার জন্য চিন্তিত।’

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বন্দুকধারীকে পালিয়ে যেতে দেখেছেন তারা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)