আধুনিক সমাজ বির্নিমানে আমাদের অনেক দায়িত্ব
পলাশীর প্রান্তর থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমাদের আছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে এসে জরাজীর্ণ দেশটাকে নিজের মা ভেবে বুকে টেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা আমাদের সবার। বারবার শত্রুর রোষানলে পড়ে জর্জরিত হয়েছে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজন হয়।ভারত বিভাজন হল ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক বিভাজন।১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ভারত ভেঙে হয়ে পাকিস্তান আধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামে দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করা হয়। পাকিস্তান অধিরাজ্য পরবর্তীকালে আবার দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নামে দুটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ভারত অধিরাজ্য পরবর্তীকালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র বা ভারত গণরাজ্য নামে পরিচিত হয়। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের ফলে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ও পাঞ্জাব প্রদেশ দ্বিখণ্ডিত হয়। বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ভেঙে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য (ভারত) ও পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশ (পাকিস্তান) গঠিত হয়। পাঞ্জাব প্রদেশ ভেঙে পাঞ্জাব প্রদেশ (পাকিস্তান) ও পাঞ্জাব রাজ্য (ভারত) গঠিত হয়। ভারত বিভাজনের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী , ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস ও অন্যান্য প্রশাসনিক কাঠামো এবং রেলপথ ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় সম্পদ দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বিভক্ত করে দেওয়া হয়।
তারপর পাকিস্তানের অধীনে দীর্ঘ ২৪ বছর থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালিরা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলাদেশের মানুষ প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
আধুনিক সুখী-সমৃদ্ধ দেশ,জাতি এবং সমাজ বিনির্মাণে আমাদের সবার দায়িত্ববোধ অপরিসীম। তথ্য-প্রযুক্তির অবাধ প্রবাহের মাধ্যমে আমদের যুবসমাজ বর্তমান বিশ্বের সাথে খাইয়ে চলতে অভ্যস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষ মেধাবীরা পৃথিবীর বিভিন্ন নামকরা আন্তর্জাতিক জার্নালে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।
বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। তারা দেশে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আনছে ফলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে,দেশ ও সমাজ সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণ চিংড়ি, তৈরি পোশাক, মোম, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, সিরামিকপণ্য, চাউল সহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
সুষ্ঠু সমাজ গঠন করতে হলে যুবসমাজকে সুষ্ঠু সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে। বাংলা গানে, নাটকে,চলচ্চিত্রে বিদেশি ভাষা বর্জন করতে হবে। মাদকসেবীদের মাদক থেকে দূরে থাকার জন্য আহ্বান জানাতে হবে। প্রয়োজনে তাদের মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠাতে সহযোগিতা করতে হবে।
সমাজের সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। কারো প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না। ধর্ম-বর্ণ-জাতি-কূল বিভেদ করা যাবে না। মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। কাউকে ছোট করে না দেখে তাকে তার প্রাপ্য মর্যাদা দান করতে হবে। সর্বোপরি,আধুনিক সমাজ বিনির্মাণে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই।