সাতক্ষীরা নির্যাতিত নারীদের কথা বলে সাহসী নারী পারভীন
সুস্থ হোক বাংলাদেশ, সমাজ হোক সবার জন্যই বসবাসের যোগ্য। মানবতা জাগ্রত হোক প্রতিটি মানবহৃদয়ে। পরিচ্ছন্নতায় এগিয়ে যাক প্রিয় সোনার বাংলাদেশ। আর এমনই প্রত্যয়ে এগিয়ে চলেছেন একজন অকুতোভয়ের বীর নারী সৈনিক পারভীন সুলতানা (সাদিয়া)।
পারভিন সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া গ্রামের ইনছাফ আলীর মেয়ে। দারিদ্র্যতার মাঝে বেড়ে উঠা পারভিন সুলতানা লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী পারভিন সুলতানার স্বপ্ন ছিলো লেখাপড়া করে ডাক্তার হওয়ার। তবে বাধঁ বাধেঁ দারিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া। দারিদ্রর কাছে মেধার হার মেনে নিয়ে ২০০৮ সালে মাত্র ১৩বছর বয়সে বিয়ের পিড়িঁতে বসতে হয় তার। তবে সুখের সংসারের দেখা পাননি তিনি। নেশাগ্রস্থ স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের যৌতুকের দাবিতে তার (পারভীনের) উপর চালাতো অমানবিক নির্যাতন। যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেরে দুই সন্তানের জননী হয়েও ২০১৬ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ করতে বাধ্যে হন তিনি।
বিবাহ বিচ্ছেদে সমাজের মানুষের নানা কুটুক্তি কে মোকাবেলা করে সমাজের কোটি মানুষের ভিড়ে যেখানে অবহেলিত শত সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদগুলো সেখানেই দারিদ্র পরিবারের সন্তান ও বিবাহ বিচ্ছেদ নারী হয়েও একজন দেশপ্রেমী হিসেবে নিজেকে পরিচয় করাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
পারিবারিক ভাবে পারভিন সুলতানা (সাদিয়া) দারিদ্র্যতার মাঝে জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠলেও তার দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালবাসা হার মানাই উচ্চবিত্ত পরিবারের মানুষদের। যারা সমাজের নিম্নশ্রেণী মানুষদের অবজ্ঞার চোখে দেখে! সেখানে পারভিন সুলতানা (সাদিয়া) সমাজের অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের পাশে থেকে তাদের অধিকার আদায়ে কাজ করে যেনো গোলাপ ফুলের মতো সুগন্ধ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
২০১৬সালে বিবাহ বিচ্ছেদে ভেঙ্গে না পড়ে বরং সন্তানদের আগলিয়ে রাখেন মাতৃ ছায়ায়। সন্তানদের আগলিয়ে রাখার পাশাপাশি সমাজের নির্যাতিত নারীদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন অনবরত। আর যাতে কোন নারী সেহোক বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত তবে সে যেনো এতে (বিধবা/ডিভোর্স হওয়ায়) ভেঙ্গে না পড়ে বরং নিজেকে নতুন ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন পারভিন সুলতানা (সাদিয়া)। সমাজের সুবিধা বঞ্চিত নারীদের পাশে থেকে তাদের অধিকার আদায়ের পাশাপাশি পারভিন সুলতানা (সাদিয়া) মানবসেবায় অবদান চোখে পড়ার মতো। যেকোন মানুষের রক্তের প্রয়োজনে পারভিন সুলতানা (সাদিয়া) একজন ব্লাড ব্যাংক আবার শীর্তার্থদের প্রয়োজনে তিনি আরামদায়ক কাপড়ের ডিলার হয়ে ভালবাসা ছড়ান।
এ বিষয়ে পারভিন সুলতানা (সাদিয়া) বলেন, আমি বাংলাদেশকে ভালবাসি। নিজের পবিত্র অন্তঃস্থল থেকে, এদেশকে পরিষ্কার করার দায়িত্ব আপনার আমার সকলের। সমাজে সবকিছু অবহেলিত হতে থাকলে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উন্নত দেশ হিসেবে দেখাবো কী করে?
আমরা যদি সব দায়িত্ব সরকারের উপর বর্তায়ে বসে থাকি কখনো দ্রুত নিজেদের উন্নত দেশ গড়তে পারবো না। একারণে যার যার অবস্থান থেকে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের কুসংস্কার দূর করতে কাজ করা উচিত। এ সময় তিনি তার ও তার সন্তানদের জন্যে সকলের কাছে দোয়া চান।