বিশ্বের সর্ববৃহৎ মৌমাছি
ছোট ছোট মৌমাছি হরহামেশাই ফুলের মধু খাচ্ছে এমন দৃশ্য ছোট বড় প্রায় সকলেই দেখেছেন। অনেকে তো আবার মৌমাছির ভয়াল কমড়েও ধুকেছেন! এজন্য মৌমাছিদের আশপাশ থেকে মানুষ একটু দূরেই থাকে। তবে বিশেষ তথ্য হলো, ইন্দোনেশিয়ার একটি দূরবর্তী স্থানে প্রায় ৪০ বছর পরে পুনরাবিষ্কৃত হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় মৌমাছি। দৈত্যাকার এই মৌমাছিটি ‘উড়ন্ত বুলডগ’ নামেই পরিচিত, এর আকার প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের বুড়ো আঙুলের মতো।
বিশ্ব বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা বলেছে, ১৯ শতকে ব্রিটিশ প্রকৃতিবিদ অ্যালফ্রেড রাসেল ওয়ালেস এই দৈত্যাকার মৌমাছিটি আবিষ্কার করেন এবং এর নাম দেন ‘উড়ন্ত বুলডগ’। মৌমাছি ফটোগ্রাফার বিশেষজ্ঞ ক্লে বোল্ট যিনি এই বিশাল মৌমাছির ছবি তোলেন, বলেন, “জীবন্ত এই বিশাল মৌমাছি আদতে কতটা সুন্দর, এর বিশাল ডানার আওয়াজ কতটা অসাধারণ সেসব প্রত্যক্ষ করতে পারাটাই দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা।”
উত্তর মোলুক্কাসের ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপ অঞ্চলের বাসিন্দা এই মৌমাছির পুরো নাম মেগাচাইল প্লুটো তার বিশাল শুঁড় দিয়ে ছত্রাক থেকে বাসাকে রক্ষা করতে চটচটে রেজিন সংগ্রহ করে। আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় এই মৌমাছিকে বিপন্নের তালিকাতেই অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এই মৌমাছি সংখ্যায় নেহাত কম না হলেও এদের এমন প্রান্তিক দূর্গম অঞ্চলে পাওয়া যায়, সেখানে পৌঁছে গবেষণা বা দেখভাল করা কঠিন। এসব অঞ্চলে বেশ কয়েকটি পূর্ববর্তী অভিযান এই মৌমাছি খুঁজে পেতে ব্যর্থই হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়া প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিদ এবং প্রাণীর আবাসস্থল। কিন্তু কৃষির জন্য যে পরিমাণে জমি কাটা হচ্ছে তাতে অনেক প্রজাতির প্রাণী ও কীটপতঙ্গ সম্প্রদায়ের প্রাকৃতিক আবাস চিরতরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্টোমোলোজিস্ট এলি ওয়াইম্যান এনডিটিভিকে বলেন, “আমি আশা করি এই পুনরাবিষ্কার ভবিষ্যতের গবেষণাকে সমৃদ্ধ করবে যা আমাদের এই অনন্য মৌমাছিটির ইতিহাস সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে সাহায্য করবে এবং বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ভবিষ্যৎ প্রচেষ্টাকেও সমৃদ্ধ করবে।”