সাতক্ষীরা শহরে মশার যন্ত্রণা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে

পিঁপড়ার মত যদি নিজের শরীরের পঞ্চাশগুন বেশি ওজন মশাও টেনে নিতে পারত তবে কত মানুষকে যে মশা গুম করে ফেলত তার হিসাব দেয়া খুব সহজ কাজ হত না ! কথাটি হাস্যকর শোনালেও সাতক্ষীরা শহরে সাম্প্রতিক মশার উৎপাত দেখলে এমনটা ধারণা করা খুব বেশি অযৌক্তিক হবে না । তবে মশা কাউকে গুম না করলেও ঠিকমত কোন কাজ করতে দিচ্ছেনা । মশা নিধন গুড নাইট, কয়েল, স্প্রে কিংবা অন্যসব সরঞ্জামও মশাকে যেন থামাতে পারছে না ।

 

আর এতে করে মশার কামড়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশু ও শিক্ষার্থীরা। অতীতে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল, গরম কালে মশা আর মাছিই মানুষের প্রধান শত্রু । দিনে মাছি এবং রাতে মশা মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলত । তবে বৈশ্বিক জলবায়ুর মত করে মশা-মাছিও অভ্যাস পরিবর্তন করেছে । মাছির প্রকোপ কিছুটা কমে গেলেও মশার সংখ্যা ও জ্বালাতন দিনে দিনে বেড়েই চলছে । শুধু গরমের মওসুমেই নয় বরং শীতের মওসুমেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মশা মানুষকে মারাত্মকভাবে অতিষ্ঠ করে তুলে । আগে সাধারণত দিনের বেলায় মশা জনসম্মুখে বের হত না বললেই চলে কিন্তু বর্তমানে মশা সে লজ্জাটুকুও ত্যাগ করেছে । এখন মশার কাছে দিন আর রাতের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নাই । তবে দিন-রাতের মধ্যে সন্ধ্যার সময়টাই বোধহয় মশার কাছে খুব প্রিয় ।

তাইতো সন্ধ্যা ঘনাতেই মশার উৎপাত চরমভাবে বেড়ে যায় । মশার যন্ত্রণায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা । সন্ধ্যার পরে শিক্ষার্থীরা পাঠে মনযোগী হবে না মশা তাড়াতে ব্যস্ত— হবে তা ঠিক করতেই রাতের একাংশ কেটে যায় । সনাতন পদ্ধতির ধুপ প্রজ্বলন করলে সামান্য সময় মশার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া যায় কিন্তু শহরের আধুনিক জীবন পদ্ধতির সাথে এটা যে বড় বেমানান । মশারি খাঁটিয়ে বসে থাকলেও শেষ রক্ষা নাই ।

 

প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত বাহিনী যেমন অতি সংগোপনে শত্রুর ডেরায় প্রবেশ করে তেমনি মশাও যে কোন ফাঁকে কোন ফোকর দিয়ে মশারীর মধ্যে প্রবেশ করে তা লক্ষ্যই রাখা যায়না । শহরে খালপাড় এর দোকান মালিকরা জানান আমরা সারাদিন দোকানে বসে দোকানদারি করতে পারি না আর সন্ধ্যে হলে তো মোটেই বসতে পারি না। যার কারণে খালটিতে প্রচন্ড ময়লা জমে গেছে। সাতক্ষীরা ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান আমরা সন্ধ্যের পর দোকানে বসতে হলে মশার কয়েল জ্বালিয়ে বসতে হয় তাছাড়া দোকানে বসা যায় না। যদি পৌরসভা থেকে স্প্রে করে একটু মশা কমিয়ে দিত তাহলে আমি মনে করি ভাল হত। এছাড়াও দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সালেহা খাতুন জানান আমরা সন্ধ্যের পর ঘরে বসতে পারি না মশার যন্ত্রণায় ।

 

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন আমিও গতকাল বাইরে বসে দেখলাম মশার উৎপাত বেড়ে গিয়েছে। তাই ব্যাপারটা আমিও অবগত আছি, এখনই মেয়র মহোদয় কে বলব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)