রায় পেলেই জামায়াত নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখনই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে মামলা বিচারাধীন। আদালতের রায় পেলেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নত্তোর পর্বে এসব কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশা করছি আদালতের রায়ের মাধ্যমেই জামায়াত শীঘ্রই নিষিদ্ধ হবে। তবে এটা খুবই ন্যাক্কারজনক যে, জামায়াত নিবন্ধিত না হয়েও বিএনপির সঙ্গে জোট করে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। আমি বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা তাদের ভোট না দিয়ে প্রত্যাখান করেছে। জনগণ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিকে কখনোই সমর্থন করে না বলেও জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল এবং এদেশে গণহত্যা থেকে শুরু কর নারী ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ নানা ধরনের অপরাধ করেছিল। সেই অপরাধের বিচার স্বাধীনতার পর জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর যখন জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই বিচার কার্য বন্ধ করে দেয়। জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়। ভোটের অধিকার দেয়। যেটা আমাদের সংবিধানে ছিল না। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে দেয়া হয় এবং ৩৮ অনুচ্ছেদের আংশিক সংশোধন করে এদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এখন তাদের বিরুদ্ধে জনমত এমনভাবে সৃষ্টি হয়েছে, জামায়াতকে এ দেশের মানুষ প্রত্যাখান করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য যে নিবন্ধন লাগে নির্বাচন কমিশনে এবং তার যে শর্তগুলি সেগুলো তারা পূরণ করতে পারেনি বলে তাদের নিবন্ধন দেয়া হয়নি। কিন্তু তাদের নিষিদ্ধ করবার জন্য ইতিমধ্যে কোর্টে একটি মামলা রয়ে গেছে। সেই মামলার রায়টা যতক্ষণ পর্যন্ত না হবে সেখানে বোধহয় আমরা কোনকিছু করতে পারি না। আমি আশা করি, কোর্টের রায় দ্রুত যদি হয়ে যায় তাহলে জামায়াত দল হিসেবে তারা নিষিদ্ধ হবে।

তবে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হলো, যেখানে তারা নিবন্ধিত না সেই অবস্থাতেও তারা নিজেদের জামায়াতে ইসলামীর নামে বিএনপির সাথে একযোগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জোটবদ্ধ করে ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ জানাই; তারা তাদেরকে ভোট দেয়নি, সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করেছে।

তিনি বলেন, যারা অপরাধী, মানুষ খুন করা থেকে মানি লন্ডারিং, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এতিমের অর্থ আত্মসাৎসহ এই সমস্ত মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত, যারা গ্রেফতারকৃত; কিন্তু যারা বিদেশে পালিয়ে আছে, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য আলোচনা চলছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে পারবো।

 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)