সরকারী চাকরিতে অবসর এবং প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ছে

সরকারী চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো হচ্ছে। সরকারের নীতি নির্ধারক সূত্র বলছে, ব্যাপারটি নিয়ে সরকার কাজ করছে। যেকোন সময় সরকারী চাকরির বয়সসীমা একবছর বাড়ানো হতে পারে বলে জানা গেছে। দশম জাতীয় সংসদে জনপ্রশাসন সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি বয়সসীমা বাড়িয়ে ৬২ বছর করার সুপারিশ করেছিল। যেহেতু নির্বাচনের প্রক্কালে সেই প্রস্তাব হয়েছে, তারপর নির্বাচনকালীন সময়। সেজন্য সরকার তখন এটা নিয়ে কাজ করেনি। বর্তমানে সংসদীয় কমিটির সুপারিশটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে দুটি বৈঠকও হয়েছে। এই বৈঠকে সংসদীয় কমিটি যে সুপারিশ করেছে সেই সুপারিশকে গ্রহণযোগ্য মনে করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, সংসদীয় কমিটি চাকরির বয়সসীমা বর্তমান বয়স ৫৯ থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছর করার প্রস্তাব দিয়েছিল। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলেছে, একবারে চাকরির বয়স ৬২ বছর করার পরিকল্পনা সরকার আপাতত গ্রহণ করবে না। সর্বোচ্চ এক বছর বাড়ানো হতে পারে। ৫৯ বছর থেকে এটা ৬০ বছর করা হতে পারে। অবশ্য আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে একই সঙ্গে চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমার ব্যাপারে কোন সুস্পষ্ট ঘোষণা দেয়নি। তবে দেখা যাচ্ছে যে, নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোরতা গ্রহণ করেছে। বেশকিছু চাকরিতে মেয়াদন্তে কর্মকর্তাদের অবসর দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। মনে করা হচ্ছে, প্রচুর প্রশাসনিক কর্মকর্তা এখন দ্রুত পদোন্নতি পাচ্ছেন এবং নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষা হওয়ার কারণে সরকারী চাকরিতে কোন শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে না। তাই সরকার পর্যায়ক্রমে, জনপ্রশাসনের ক্ষেত্রে কতগুলো সুনির্দিষ্ঠ পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা ভাবছে। যেমন:

১. চাকরির বয়সসীমা ৫৯ থেকে বাড়িয়ে ৬০ বছর করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে খুব শিগগিরই একটা প্রস্তাবনা চুড়ান্ত করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দিবেন। এটা মন্ত্রিসভায় আলোচিত হতে পারে।

২. বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া চাকরিতে কোন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

৩. আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনে অঙ্গীকার করেছিল, সরকারী চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর ক্ষেত্রে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরীখে যুক্তিসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা, কারিগরি , আইটি এবং তথ্য প্রযুক্তিসহ বিশেষায়িত চাকরির ক্ষেত্রে যদি যোগ্য এবং মেধাবী প্রার্থী পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিলের একটি বিধিমালা সংযোজন করার পরিকল্পনা সরকারের আছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অনেক সময় দেখা যায় একটি গবেষণা কার্যক্রমের জন্য যে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে বর্তমান চাকরির বয়সসীমা বাধা হয়। এই বাধাগুলো উঠিয়ে দেওয়া হবে। তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও অনেক সময় সরকারকে এক্সপার্ট বা বিশেষজ্ঞ হায়ার করতে হয়। সেক্ষেত্রে চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হবে। তাছাড়া সরকারের নতুন নতুন যে প্রকল্পগুলো শুরু হচ্ছে। যেমন পরমানু গবেষণা, মহাকাশ গবেষণা। ইত্যাদির চাকরির ক্ষেত্রে বয়সসীমা শিথিল করা হবে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে।

তবে এই সমস্ত বিষয় কবে থেকে চালু হবে সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন সুস্পষ্ট দিন তারিখ চুড়ান্ত করা হয়নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)