এক বিনয়ী দেশের নাম “জাপান”
প্রাচীনতম দেশ জাপান পরিপূর্ণ তাদের ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস ও সংস্কৃতির বেড়াজালে। তবে জাপান দেশটি বিদেশি ভ্রমণ পিপাসুদের প্রতি এক প্রকার সদয় নয় বললেই চলে। হয়তো সে কারণেই জাপান ট্যুরিস্টদের জন্য আকর্ষণীয় একটি স্থান। যেহেতু জাপানীদের জন্য বিদেশি কালচার একদম নিরুদ্ধ সেকারণে জাপানী সংস্কৃতি মার্কিন ও ব্রিটিশদের থেকে বেশ ভিন্ন। জেনে নিন জাপানীদের সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য!
১. জাপানীদের নেই কোনো পরিচারিকা
জাপানের রাস্তাঘাট অস্বাভাবিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে, এমনকি টোকিওর মতো ব্যস্ত নগরীতেও বৃহদ্বায়তন মেগাশপিং কমপ্লেক্সগুলো সহ সবকিছু থাকে ঝকঝকে। অথচ শুনলে অবাক হবেন এসব রাস্তা-ঘাট পরিষ্কারের জন্য নেই কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মীও। কীভাবে সম্ভব এতো পরিচ্ছন্নতা? এসব কিছুর জন্য দায়ী তাদের আচরণ। জাপানের কোনো ছোটো বাচ্চা থেকে বুড়ো মানুষ কেউ কখনো রাস্তায় ময়লা আবর্জনা ফেলে না৷ বরং কোনো বয়স বিচার ছাড়া যে কেউ কোনো নোংরা রাস্তা দেখলে পরিষ্কার করতে থাকে। এটি তাদের স্বভাবতই বৈশিষ্ট্য।
২. জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশই জাপানীজ
বর্তমান পৃথিবী প্রতিনিয়ত হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির মিশ্রণে তৈরি হয় বর্তমান দেশগুলো। এদিক থেকে একগুয়ে জাপানীজরা। তাদের সংস্কৃতি শুধুমাত্র বেড়ে উঠে তাদের মূল ধরে। জনসংখ্যা শুধু জাপানীজ হওয়ার আরো একটি কারণ হলো ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে শক্তিশালী নিষেধাজ্ঞা। যে কারণে বাইরের দেশের অধিবাসীরা জাপানে আশ্রয় নিতে পারেনা। এর একটি ভালো দিক হলো তাদের নিজেদের ঐতিহ্য বজায় ও সংস্কৃতির গোড়া মজবুত রাখা। কিন্ত এর মন্দ দিকটি হলো আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় থেকে পিছিয়ে পড়ছে দেশটি।
৩. তারুণ্যের অভাব
বর্তমানে জাপানীজ রা সমস্যায় ভুগছে জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পর্কে। শিশুদের স্কুল, মেডিসিন, আরো বিভিন্ন বিষয়গুলোতে পারিশ্রমিক দেয়া জাপানে কঠিন হয়ে পড়ছে কারণ জাপানীজদের বেশির ভাগেরই কোনো সন্তান নেই। যেকারণে বয়স্ক মানুষের জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে অতি মাত্রায়। বর্তমানে শতকরা ২৫ ভাগ জনসংখ্যা ৬৫ বছরের নীচে। যার একমাত্র সমাধান হতে পারে অধিবাসীদের আগমনের ব্যবস্থা করা। যাতে করে কমতে পারে জনসংখ্যা বিষয়ক সমস্যাগুলো। ৪. কাজের মাঝে ঘুম
সারা বিশ্ব জুড়ে কর্মদিবস থাকে অন্তত দিনে ৮ ঘণ্টা। কিন্ত জাপানে একটি রীতি আছে সেখানে সকলেই সময়ের বেশি সময় কাজ করে। যেটি প্রমাণ করে আপনি কাজের প্রতি যথেষ্ট আগ্রহী এবং সে কারণে আপনার ব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত হয়ে আপনি কাজের ফাঁকে একবার ঘুমিয়েও নিতে পারেন। এতে কারো উপর জরিমানা আরোপ করা হয় না বরং এতে ঘোষিত হয় আপনি কতোটা বেশি কাজ করেছেন যার ফলে ক্লান্ত হয়েছেন। বেশ অদ্ভুত শুনালেও এটি হলো জাপানীজদের অত্যন্ত স্বাভাবিক বাস্তবতা।
৫. পর্নোগ্রাফি আসক্ত
জাপানিজ সুপারমার্কেটগুলো যেগুলো কম্বিনি নামে পরিচিত সেগুলোতে অবাধে পাওয়া যায় পর্ণ বিষয়ক ম্যাগাজিন। যেকোনো বয়সের মানুষ এমনকি অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরাও কিনতে পারে এসব ম্যাগাজিন। শিশুদের পরিবার থেকে অথবা কোনো প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ সম্পর্কে কিছু শেখানো হয়না। শিশুরা নিজেরাই এ সম্পর্কে জেনে নেয় যে কারণে এ বিষয় থাকে সকলের জন্য উন্মুক্ত।
৬. ছাতাদানী সহ ছাতা!
আপনি যদি জাপানের রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকেন লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন এর রাস্তা ধরে সারি করে রাখা আছে ছাতাসহ ছাতার রাখার দানী। যদি হঠাত আপনার অপ্রস্তুত মূহুর্তে বৃষ্টি এসে পড়ে আপনার অসুবিধে কাটাতে আপনি নিয়ে নিতে পারেন যেকোনো একটি ছাতা এবং জাপানীজরা নিজের দেশের প্রতি এতোটা সৎ তারা বৃষ্টি শেষে সেই ছাতাগুলো রেখে দেন আগের সেই নির্দিষ্ট স্থানে।