১৮ ডিসেম্বর ইশতেহার তুলে ধরবেন শেখ হাসিনা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭ অধ্যায়ে ২১টি বিশেষ অঙ্গীকারকে প্রাধান্য দিয়ে ৬৪ পৃষ্ঠার নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর প্যান-প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতির সামনে ইশতেহার তুলে ধরবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচনের ১১ দিন হাতে রেখে ইশতেহার প্রকাশ করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহার কমিটির আহ্বায়ক ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এবার ইশতেহারে আগামীর বাংলাদেশের কথা তুলে ধরা হবে। ২০৩০ কে মূল লক্ষ্য ধরলেও আগামী ১০০ বছরে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে, তা স্পষ্ট করা হবে ঘোষণা পত্রে। বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় তরুণদের সম্পৃক্ত করাসহ ২০৩০ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশেষ পরিকল্পনাও রাখা হয়েছে ইশতেহারে।

এছাড়া, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালনের বছর দু’টি নিয়ে আওয়ামী লীগের বিশেষ পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে ইশতেহারে।

গুরুত্ব বিবেচনায় ৭ অধ্যায়ে বিভক্ত ইশতেহার:

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে প্রাধান্য পাওয়া বিষয়গুলোকে মোট ৭ অধ্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। অঙ্গীকারে শুরু হয়ে পটভূমি, তৃতীয় ভাগে থাকছে আওয়ামী লীগ সরকারের গত দুই মেয়াদের সাফল্যের চিত্র।

এরপর দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে ইশতেহারে। পঞ্চম অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দশ বছরে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের অবস্থান কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা স্থান পেয়েছে। এরপর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।

এরপর উপরের ছয় অধ্যায়ের সার-সংক্ষেপ তুলে ধরে জাতির কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে আহ্বানের মধ্যদিয়ে ইশতেহারের ৬৪তম পৃষ্ঠা শেষ হয়েছে।

৭ অধ্যায়ে ভাগ করা ইশতেহারপত্রে গুরুত্ব বিবেচনায় একাধিক উপ-ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

অঙ্গীকারনামা ঠিক করতে প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে স্বাধীন বাংলাদের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্ধৃতি- ‍‍“এ স্বাধীনতা আমার ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি আমার মানুষ পেট ভরে ভাত না খায়। স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না, যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়। স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এ দেশের মানুষ, যারা আমার যুবক শ্রেণি আছে, তারা চাকরি না পায় বা কাজ না পায়।”

২১ বিশেষ অঙ্গীকার:

স্বাধীন বাংলার রূপকারের এ উদ্ধৃতি ধরে প্রাধান্য পাওয়া বিশেষ অঙ্গীকারে প্রথমেই থাকছে, আমার গ্রাম-আমার শহর, গ্রাম পরিকল্পনা, প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণসহ তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা ও শিশু কল্যাণ। পুষ্টিসম্মত ও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা। সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল। মেগা প্রজেক্টসমূহের দ্রুত ও মানসম্মত বাস্তবায়নের মতো বিষয়গুলো।

এছাড়া থাকছে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করা। সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি। দারিদ্র্য নির্মূল, সব স্তরে শিক্ষার মান বৃদ্ধি, সব স্তরে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার নিশ্চয়তা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ও সার্বিক উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির অধিকতর ব্যবহার। আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা, দক্ষ ও সেবামুখী জনপ্রশাসন তৈরি করা। ব্লু-ইকোনমি, তথা সমুদ্র সম্পদ উন্নয়ন, নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা, প্রবাসী কল্যাণ কর্মসূচি এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে বিস্তারিত পরিকল্পনা।

২০০৮ সালের ‘দিন বদলের সনদ’ও ২০১৪ সালের ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ স্লোগানে ইশতেহার প্রকাশ করে মানুষের ব্যাপক সাড়া পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। গত দশ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এবার স্লোগান ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’।

তরুণ ভোটারদের আকৃষ্টে বার্তা:

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, তরুণ সোয়া ২ কোটি ভোটারকে নিয়ে বিশেষ ভাবনা আওয়ামী লীগের। তরুণ ভোটারদের মনতুষ্টিতে নির্বাচনী ইশতেহারে রাখা হয়েছে একগুচ্ছ ঘোষণা। তরুণদের ভবিষ্যতের কথা সামনে রেখেই প্রণীত হচ্ছে আওয়ামী লীগের ইশতেহার।

এইচ টি ইমাম বলেন, ইশতেহার ঘোষণার পর ভবিষ্যৎ বির্নিমাণের অংশ হিসেবেই তরুণরা আওয়ামী লীগের সহযাত্রী হবে। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ তরুণদের কাছে এ বার্তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে যে, আধুনিক সমৃদ্ধ উন্নত দেশ গড়তে শেখ হাসিনা তথা নৌকার বিকল্প নেই। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা বলছি, ‘তরুণদের প্রথম ভোট- নৌকায় হোক’।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)