ফুল-পতাকা হাতে আসছে শিশুরাও
রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে বড়দের পাশাপাশি আসছে শিশুরাও। ভোর থেকেই শিশুদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
কেউ বাবা-মায়ের সঙ্গে, কেউ স্কুলের সহপাঠীসহ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে আসছে শ্রদ্ধা জানাতে। তাদের কারো হাতে জাতীয় পতাকা, কারো হাতে ফুল দেখা গেছে। কেউ কেউ কোমল মুখে অঙ্কন করেছে লাল-সবুজের পতাকা।
মায়ের সঙ্গে পতাকা হাতে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে নিঝুম নামের ছোট্ট এক শিশু। নিঝুম ডেইলি বাংলাদেশকে বলে, আম্মুর সঙ্গে ফুল দিতে এখানে এসেছি।
এদিকে, ভোর থেকেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ধর্ম, বর্ণ নিমিশেষে হাজার-হাজার মানুষ। সকাল সাড়ে ৮টায় দলের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে শহীদ পরিবারের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর শ্রদ্ধা জানান নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। পরে সর্বস্তরের মানুষ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
১৪ ডিসেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বেদনাঘন দিন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল পরাক্রমের সামনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে।
তারা বেছে বেছে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দার্শনিক ও সংস্কৃতিক্ষেত্রের অগ্রগণ্য ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পাকিস্তানি ঘাতকদের এ বর্বর হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছিল রাজাকার-আলবদর বাহিনী।
মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিল ঘাতকেরা। বিজয় অর্জনের পর রায়েরবাজারের পরিত্যক্ত ইটখোলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে একে একে পাওয়া যায় হাত-পা-চোখ বাঁধা দেশের খ্যাতিমান এই বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ।