‘খালেদার প্রার্থিতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে ইসি’

প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচজন কমিশনারের মধ্যে ৪-১ ভোটের রায়ে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের আপিল শুনানিতে নামঞ্জুর করা হয়েছে। এরপর আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা উল্লাস প্রকাশ করলেও উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিএনপির আইনজীবীরা।

রায়ের পরই আপিল শুনানির কক্ষ থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘নির্বাচন-সংক্রান্ত অপরাধের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার অভিযোগ ছিল, খালেদা জিয়া নির্বাচন-সংক্রান্ত অপরাধ করেছেন। কিন্তু তিনি তো কারাগারে। কারাগারে থেকে তো অপরাধ করা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার তিনটা আপিল মঞ্জুর করেছেন। খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নেয়ার আর কোনো আইনগত বাধা নাই। গত তিনদিন আমরা দেখেছি, আপিল শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কখনো সিইসি, কখনো অন্যান্য কমিশনাররা রায় ঘোষণা করেছেন। তারা কমিশনের সবার পক্ষ থেকেই রায় ঘোষণা করেছেন। সবাই ধারণা করেছিল মাহবুব তালুকদারে রায় সবার রায়। এটা সবার রায়। এবং সেই রায়ে বেগম খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বৈধ ঘোষণা করেন।’

‘একবার রায় ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর, দ্বিতীয়বার রায় ঘোষণার কোনো সুযোগ নেই। গত তিনদিন আপনারা দেখেছেন, দ্বিতীয় রায় হয়েছে? নির্বাচন কমিশনের এখানে বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়ন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে’, বলেন খোকন।

তিনি আরও বলেন, ‘মাহবুব তালুকদার সাহেব যে জাজমেন্ট দিয়েছেন তা লিগ্যাল জাজমেন্ট, ফেয়ার জাজমেন্ট। আমরা আইনগত এক্সামিন করে উচ্চ আদালতে যাওয়া যায় কি-না, এ বিষয়ে কনভিন্স হলে সিদ্ধান্ত নেব। আমরা বিশ্বাস করি উচ্চ আদালত খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বৈধ করবে।’

অন্যদিকে খালেদা জিয়ার রায়ের ব্যাপারে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড আপনারা দেখেছেন। আমরা গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখার জন্য কত রকমের চেষ্টা করে আসছি। কিন্তু সেটা দেখছি না।’

আওয়ামীপন্থী আইনজীবী ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নতুন ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘খালেদা জিয়া যে আপিল করেছেন। সেই আপিলের শুনানি শুনতেই আমরা এসেছিলাম। এখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ৫ জন নির্বাচন কমিশনার সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্থাৎ একজন ছাড়া সবাই বলেছেন, খালেদা জিয়ার আপিল নামঞ্জুর করা হয়েছে। এখানে বিতর্কের আর কোনো স্কোপ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধানের ৬৬ ধারা অনুযায়ী তারা জাজমেন্ট দিয়েছেন। একজন বিপক্ষে জাজমেন্ট দিলেও কিছু করার নেই। এটা মেজোরিটি জাজমেন্ট। বিগত সব কিছু বিবেচনা করে। চিৎকার করার কিছু নেই। এটা আমরা সবাই মেনে নিতে বাধ্য। আর এটাই লিগ্যাল পজিশিন। সুতরাং বেগম খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিল হলো। তিনি আর নির্বাচন করতে পারবেন না।’

এক প্রশ্নের জবাবে ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগের জাজমেন্ট রয়েছে। সেটাও তারা বিবেচনায় নিয়েছেন। আর ৬৬ ধারা তো আছেই বিবেচনায়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)