আওয়ামী লীগে নারী প্রার্থী ২২, বিএনপিতে ৯
আমাদের সংবিধান অনুযায়ী দেশে নির্বাচনে প্রতিটি দলের মোট প্রার্থীর ৩৩ শতাংশ নারীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা। অর্থাৎ তিনভাগের একভাগ পরিমাণ থাকবে নারী প্রার্থী। কিন্তু আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের পর দেখা যাচ্ছে যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং তাদের ১৪ দলীয় জোট এবার তাদের দল থেকে সাকুল্যে মোট ২৬৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ২২টি আসনে নারী প্রার্থী দিয়েছে। অপরদিকে প্রধান বিরোধী পক্ষ বিএনপি ও তাদের শরিক দলগুলো নারী প্রার্থী দিয়েছে আরও কম, ১৯২ টি আসনের মধ্যে মাত্র ৯টি। সব মিলে মোট ৩১ জন নারী প্রার্থী রয়েছে এবার নির্বাচনে।
হিসাব মতে, আওয়ামী লীগ ও তাদের জোট নারী প্রার্থী দিয়েছে প্রায় শতকরা ৮জন। আর বিএনপি জোট দিয়েছে শতকরা মাত্র ৫ জন। যেখানে প্রতিটি দলের ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী থাকার কথা, সেখানে মাত্র ১২ শতাংশ নারীর লড়াই নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।
প্রার্থী তালিকা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগে তাও তুলনামূলক কিছু যোগ্যতাসম্পন্ন আত্মপ্রত্যয়ী নারী প্রার্থী রয়েছেন যেমন:শেখ হাসিনা, মতিয়া চৌধুরী, ডা. দীপু মনি, ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাহারা খাতুন। কিন্তু বিএনপি জোটে তাকালে দেখা যায় তাদের নারী প্রার্থী সংখ্যা খুবই কম। তারপর আবার যে কয়জন প্রার্থিতা পেয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগই বিএনপির পলাতক বা বিভিন্ন দণ্ডপ্রাপ্ত নেতাদের স্ত্রী। যারা নিজেরা নির্বাচন করতে পারছেন না, সেই স্বামীদের ছত্রছায়াতেই নির্বাচন করছেন তাদের স্ত্রীরা।
বিগত সংসদগুলো পর্যবেক্ষণে জানা যাচ্ছে যে, ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত যে কয়টি সংসদ গঠিত হয়েছে, তার প্রতিটিতে সরকার এবং বিরোধীদলের নেতা হিসেবে নারীই নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকি ২০১৪ সালের সমালোচিত এবং বিএনপি বর্জিত নির্বাচনেও রওশন এরশাদ প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন। আবার ২০১৪ সালে প্রথম নারী স্পিকার হিসেবে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। অর্থাৎ সরকার, বিরোধী দলের নেতা, স্পিকার সব পদেই রয়েছেন নারী।
কিন্তু ক্ষমতায় শীর্ষে এত নারীদের অবস্থান থাকার পরেও এখনো নির্বাচনের প্রত্যক্ষ ভোটে নারীদের অবস্থান অনেক পিছিয়ে। নারীদের নিয়ে এত ক্ষমতায়ন, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, সমঅধিকার নিশ্চিত হওয়ার পরেও নির্বাচনে নারীদের উপস্থিতি এত কম কেন, সেই প্রশ্ন এখনো রয়েই গেলো।