শিক্ষক হেনার জন্য এবার রাস্তায় শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ‘প্ররোচণার’ অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে থাকা শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একদল শিক্ষার্থী।
শুক্রবার দুপুরে বেইলি রোডে স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে ‘ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীরা’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে তারা। আন্দোলনে অংশ নেয়া একাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, যে শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে উনি কোনোভাবে অরিত্রীর ঘটনায় দায়ী নন। উনার নাম ঘটনার সঙ্গে আসেনি। উনি পরিস্থিতির শিকার।
এই অবস্থানে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরাও অরিত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ‘সুষ্ঠু বিচার চায়’ মন্তব্য করে ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, কোনো শিক্ষিকা যাতে অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার না হন আমরা সেটাও চাচ্ছি।
‘দোষীদের বিচার করতে গিয়ে নির্দোষের শাস্তি কেন?’, ‘অরিত্রী আমাদের বোন, শিক্ষক হাসনা হেনা আমাদের মা। নির্দোষের নিঃশর্ত মুক্তি চাই’ স্লোগান লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থানে বসেছে আন্দোলনকারীরা।
উল্লেখ্য, নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী গত সোমবার আত্মহত্যা করার পর থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে রাজধানীর নামি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। পরীক্ষার সময় অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পাওয়ায় তার বাবা-মাকে ডেকে নিয়ে ‘অপমান করেছিলেন’ অধ্যক্ষ এমন অভিযোগ উঠে। সে কারণে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, অরিত্রী রোববার বার্ষিক পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকলসহ ধরা পড়েছিলেন।
হাসনা হেনা ছিলেন অরিত্রীর ক্লাস টিচার। অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার তার বাবা যে মামলা করেছিলেন সেখানে ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আখতারের সঙ্গে তাকে আসামি করা হয়।
এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্তে অরিত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য তাদের চিহ্নিত করার পর বুধবার তিন শিক্ষককে বরখাস্ত ও তাদের এমপিও বাতিল করা হয়। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পুলিশ ও র্যাবকে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে রাতেই হাসনা হেনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সাঈদ বুধবার এই শিক্ষকের জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।