সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত সাতক্ষীরা ফসলের মাঠ
সময়ের হাত ধরে আর প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে প্রকৃতিতে যখন জেগে বসেছে শীত। দৃষ্টিনন্দন হলুদের পরসায় ভ্যানগর্গের শিল্পীর তুলিতে পরসিত।তখন হাতছানিরত গ্রাম-গ্রামান্তরের ফসলের মাঠ শুভেচ্ছা জানাতে সরষে ফুলের স্বকীয় বাহারী সৌন্দর্য আর বাতাসে ভেসে থাকা মৌ মৌ গন্ধে মুখোরিত গ্রামের মাঠঘাট। শরষের এক একটা ফুল যেন ফুল যেন খুনসুটিরত এক একটা নিঃষ্পাপ শিশুর মুখচ্ছবি। রোদে পোড়া কৃষক, সৌখিন শ্রেণির এমনকি আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবারই মন কাড়ে ফুলে ভরা শরষে খেত।
অনেকে শখ করে ছবি তুলে সরষে খেতে, অনেকে আবার শরষে খেত দেখে পাশে দাঁড়িয়ে কিংবা শরষে মাঠে হেঁটে খুঁজে ফেরে দুরন্ত প্রশান্তি। অনেকে আবার শখের বসে কিংবা বাণিজ্যিক ভাবে সরষে খেতে মৌ বাক্স রেখে মধু সংগ্রাহের মাধ্যমে একদিকে যেমন বাড়তি আয় করছেন অন্যদিকে নিজস্ব পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে।
কচি সরষে গাছ শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শরষের ফুল অতি লোভনীয় ভাজিও বটে। এছাড়া, শরষে হতে প্রাপ্ত তেল ভোজ্য হিসেবে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যর জন্য ভালো অন্যদিকে, গ্রামীণ জনপদে ঔষদের বিকল্প হিসেবে, প্রচন্ড মাথাব্যথা কিংবা ধরা,ক্লান্তি কিংবা অবসাদ দূর করতে এ তেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকে।
এ বছর সাতক্ষীরা জেলায় প্রতিবারের তুলনায় অনেক বেশি সরষে চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যনুসারে, জেলায় এবার শরষের চাষ অন্যান্য বারের চেয়ে তুলনামূলক অনেক বেশি যা আগামীতে আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। সবচেয়ে বেশি সরষে উৎপাদন হয় সাতক্ষীরা সদর,কলারোয়া এবং তালা উপজেলায় ।
কলারোয়া উপজেলার সরষে চাষী রাশেদ সরদার জানান, তিনি অন্যবারের ন্যায় এবারও সরষে চাষ করেছেন। অন্য বছর শরষের নানা ধরনের পোকার আক্রমণ দেখা যায়। কিন্তু এবারের সরষে ফলনে তেমন কোন পোকার আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়নি। আশাকরা যায়, শরষের ফলনে এবার কৃষকেরা আর্থিক ভাবে বাড়তি লাভবান হবেন।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচারক কৃষিবিদ অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, জেলার সাতটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে অন্য বছরের তুলনায় সরষে বেশি চাষ হয়েছে। শরষে ফুলে পোকার আক্রমণ রোধে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চাষীদের। পরিমিত সরষে চাষ জেলার মোট জনসংখ্যার বিপরীতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে বলে দাবী এই কর্মকর্তার।
তিনি আরও জানান ,গত বছর জেলায় ৯ হাজার ৪ শ ৫ হেক্টও জমিতে সরষে হয়েছিলো ।এবার আমন ধান কাটার দেরির কারণে এবছর সরিষা চাষ হয়েছে ৮ হাজার ২শ ৮০ হেক্টর জমিতে ।তবে ধান কাটার পরপরই আরো কিছু জমিতে সরষে আবাদ করা হবে বলে আশাকরছি ।