আচরণবিধি না মেনেই মনোনয়ন জমা, নীরব ইসি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা আচরণবিধি না মেনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বেশিরভাগ প্রার্থী। প্রায় সব দলের প্রার্থীরাই ইচ্ছেমতো দলবল নিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসেন রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে।
এদিকে মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় প্রার্থীর সঙ্গে ৭ জনের আসার অনুমতি থাকলেও শত শত লোকের বহর নিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা গেছে। যা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। এতে প্রশাসন নামমাত্র ভূমিকা পালন করলেও নীরব ভূমিকায় ছিলো ইসি।
ইসির আচরণবিধির মধ্যে অন্যতম একটি ছিলো- মনোনয়ন জমার সময় কোনো প্রার্থীই বাস, ট্রাক বা মোটরযোগে শোডাউন করতে পারবেন না। যা কোনো দলের প্রার্থী তোয়াক্কা করেননি। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়েই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন প্রার্থীরা।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সেগুনবাগিচা এলাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতিতে পুরো এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে।
এদিন সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস প্রায় ৭০জন নেতা-কর্মীর এক বহর নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এই বিষয়ে জানতে চাইলে ফজলে নূর তাপস বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। তাছাড়া আমি কাউকে নিয়ে আসিনি, আমার প্রতি সমর্থনের কারণে অনেকেই চলে এসেছেন।
আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লম্বা শোডাউন নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। এতে পুরোটা সময় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করেছে।
এদিকে জামায়াতের প্রার্থীরাও আইনজীবীসহ ৫০ জনেরও অধিক একটি বহর নিয়ে শোডাউন করে মনোনয়ন জমা দেন। পুলিশ এতে বাঁধা দিতে চাইলেও ব্যর্থ হয়।
এছাড়া আওয়ামী লীগের আরেক প্রার্থী চিত্রনায়ক ফারুকও ঢাকা-১৭ আসন থেকে প্রায় ২শ জনের এক লম্বা বহর নিয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন। পুলিশ বাঁধা দিলেও তা তোয়াক্কা না করে হুড়মুড় করে ভেতরে প্রবেশ করেন তার কর্মী ও সমর্থকেরা।
তবে এ বিষয়ে ইসি জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ক্ষেত্রে কোথাও কোন বিধি-বিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী কাজী ফিরোজ রশিদও মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় প্রায় একশ জন নেতা-কর্মীর শোডাউন দেখিয়ে যান।
ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী ৫ থেকে ৭জনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন না। কোনো শোডাউন, সভা-সমাবেশ করা যাবে না। কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রার্থীদের শোডাউন করার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী আজম বলেন, রির্টানিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে কোনো প্রার্থীকেই ৫ থেকে ৭ জনের বেশি লোক নিয়ে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। একাধিক প্রার্থীরা একসঙ্গে প্রবেশ করায় লোক বেশি দেখা গেছে। আর বাইরের কথা আমি বলতে পারবো না। তবে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করে থাকলে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।