বেনাপোল অবৈধ যাতায়াতের নিরাপদ রুট
বাংলাদেশ ও ভারতে অবৈধ পথে যাতায়াতের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বেনাপোল সীমান্ত।বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এরসদস্যদের নিয়মিত টহল এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নজরদারি থাকার পরেও চলছে এ কার্যক্রম। কাঁটাতারের বেড়া টপকে জল ও স্থলপথে চলছে অবৈধ যাতায়াত।বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার পাশাপাশি ভারত থেকেও অবৈধ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় নাগরিকরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে,দালাল চক্র ভালো কাজ আর চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নারী-পুরুষদেরকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য বেনাপোল সীমান্ত ব্যবহার করছে। আবার ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকেও অবৈধভাবে নারী-পুরুষদের আসার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী, দৌলতপুর, গাতিপাড়া ও সাদিপুর সীমান্তকে বেছে নেওয়া হয়েছে নিরাপদ রুট হিসাবে। চলতি বছর এ
সীমান্ত এলাকা থেকে শিশুসহ এক হাজার ১০০ জন নারী-পুরুষকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে দালাল রয়েছে দুই জন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দালাল জানান,ঢাকা থেকে একজন নারী বা পুরুষকে তারা কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছাতে ৭-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ নিয়ে থাকেন।দৌলতপুর সীমান্তের ঘাট মালিক মুজাম তাদেরকে ভারতে পৌঁছে দেয়।বেনাপোল হয়ে ভারতের বনগাঁ পর্যন্ত তাদের খরচ হয় চার হাজার ৩০০ টাকা।তারপর ওপারের দালাল তার নিজ দায়িত্বে সীমান্ত পার করা নারী-পুরুষ ও শিশুদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন। যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক জানান, চলতি বছর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে যাতায়াতের সময় ১৩০ জন পুরুষ,৬০ জন মহিলা ২৫ জন
শিশু এবং দুই জন পাচারকারী দালালকে আটক করা হয়েছে। সীমান্ত চৌকিগুলোতে বিজিবি সদস্যদেরকে রাখা হয়েছে সতর্ক অবস্থায়। অবৈধ পথে এপার-ওপার হওয়া বন্ধে বিজিবি সতর্কাবস্থায় রয়েছে উল্লেখ
করে খুলনার ২১ বিজিবি বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সোহেল আহম্মেদ বলেন, ‘বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তে আমাদের ছয়টি ক্যাম্প রয়েছে। ছয়টি ক্যাম্পের আওতাধীন সীমান্ত
এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিজিবি সদস্যরা চলতি বছরের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত অবৈধ পথে ভারতে যাতায়াতের সময় ৮৮৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে আটক করা হয়েছে।’বেনাপোল ইমিগ্রেশনের অফিসার ইনচার্জ আবুল
বাশার জানান, বিজিবির হাতে আটক অবৈধ পথে যাতায়াতকারীরা যদি পাসপোর্টযোগে বৈধ পথে আসা-যাওয়া করতো তাহলে সরকার এদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করতে পারতো। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম জানান, এ পর্যন্ত বেনাপোল পোর্ট থানায় অবৈধ পথে যাতায়াতকারীদের বিরুদ্ধে প্রায় দেড় শতাধিক মামলা হয়েছে।মামলাগুলোর কার্যক্রম চালু রয়েছে।