ঢাকাতেও চার স্পিনার, নেই শুধু ইমরুল
আগে-পরে অনেক কথাই হয়েছে। সমালোচকরা তীর্যক ভাষায় বলেছেন, চার স্পিনার দিয়ে টেস্ট জেতায় বাহাদুরি কি? স্বাগতিক দল হিসেবে ঘরের মাঠের সুবিধা নেয় সব দলই। তাই বলে চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামা! প্রশ্ন জাগে বৈকি?
সাধারণত চার স্পেশালিস্ট স্পিনার নিয়ে টেস্ট খেলতে দেখা যায় খুবই কম। বাংলাদেশ সেই বিরলপ্রায় ঘটনাটাই ঘটিয়েছে চট্টগ্রামে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে চার স্পিনারকে খেলিয়ে। এবং তাতে সাফল্য ধরা দিয়েছে। তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজের সাঁড়াশি বোলিং আক্রমণে মাত্র আড়াই দিনেই ৬৪ রানের ব্যবধানে টেস্ট জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
সাফল্যে ঢাকা পড়ে যায় অনেক কিছুই। সমালোচকদেরও মুখ বন্ধ। কারণ দিন শেষে চট্টগ্রাম টেস্ট জিতেছে সাকিবের দল। খুব স্বাভাবিকভাবেই চার স্পিনার ও এক পেসারে মাঠে নামার কথা ঢাকা পড়ে গেছে। তার বদলে উচ্চারিত হচ্ছে অভিষেকে নাঈম হাসানের উদ্ভাসিত বোলিং নৈপুণ্য আর বারবার আলো ছড়িয়েও আঁধারে থাকা তাইজুলের ধারাবাহিক বোলিং সাফল্যের কথা।
পিচে বল ঘুরলে সমস্যা হয় টাইগারদেরও। দেবেন্দ্র বিশু, জোমেল ওয়ারিকান, রস্টোন চেজকে খেলতেও বেগ পেতে হয়েছে ইমরুল, সৌম্য, মুমিনুল, মুশফিক, মিঠুন, সাকিবদেরও। পাশাপাশি শ্যানন গ্যাব্রিয়েলও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে অখেলোড়িচিত মনোভাব ও আচরণের কারণে শাস্তির খাঁড়ায় পড়ে ঢাকা টেস্টে খেলতে পারবেন না গ্যাব্রিয়েল।
সেক্ষেত্রে নতুন বলে সুইং এবং পুরনো বলে ‘রিভার্স’ এর মুখে পড়ার শঙ্কা কমেছে অনেকটাই। সব মিলে পিচ স্পিন উপযোগী বা স্পিন ফ্রেন্ডলি হলেই বেশি সুবিধা টাইগারদের। টিম ম্যানেজম্যান্টের ভাবনাও তেমন। চট্টগ্রামের মতো ঢাকায়ও এক পেসার, চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামবে সাকিব বাহিনী।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জাগোনিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘যেহেতু চার স্পিনার ফর্মুলা কাজে দিয়েছে এবং সাকিব, তাইজুল, মিরাজের সাথে নাঈমও জ্বলে উঠেছে তাই আমরা একই কম্বিনেশন রাখার কথা ভাবছি। শেরে বাংলায়ও তাই এক পেসারের সাথে চার স্পিনারে একাদশ সাজানো হবে।’
প্রধান নির্বাচক আরও জানান, ঢাকা টেস্টের জন্য আর নতুন করে কাউকে ডাকা হবে না। তবে তারা তামিম ইকবালকে পেতে মুখিয়ে আছেন। ওমরাহ শেষে ক’দিন দেশে ফেরা তামিমের ফিটনেস খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে। তামিম নিজ থেকে তার খেলার সম্ভাবনা ফিফটি-ফিফটি বললেও, প্রধান নির্বাচক ও টিম ম্যানেজম্যান্ট শেষমুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে আগ্রহী।
তাই নান্নুর কথা, ‘আমরা ২৮ (নভেম্বর) তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করবো তামিমের জন্য। তামিম খেলতে পারলে এক সমীকরণ, না খেললে ভিন্ন কথা। তবে ইমরুল খেলবে না- এটা নিশ্চিত। আমরা ইমরুলকে বাইরে রেখেই দল সাজানোর কথা ভাবছি।’
তার মানে ভাগ্য খুলে যেতে সাদমান ইসলাম অনিকের। এবারের জাতীয় লিগে সবার চেয়ে বেশি রান করা বাঁহাতি এ ওপেনারের টেস্ট অভিষেক হয়ে যেতে পারে ঢাকায়। তামিম খেলতে না পারলে তো এমনিই সাদমান খেলবে। তামিমকে পেলেও অপর ওপেনার হিসেবে বিবেচনায় থাকবেন সাদমান। কারণ চট্টগ্রামে সৌম্য সরকারের অবস্থাও খুব ভালো ছিলো না। দুই ইনিংসে করেছিলেন কেবল ১১ (০+১১) রান।
এছাড়া স্পিনিং ট্র্যাকে সৌম্যর আক্রমণাত্মক অ্যাপ্রোচ ও স্ট্রোক প্লে তেমন কার্যকর হবে না। তার চেয়ে গ্রাফটার সাদমান হতে পারেন বেটার অপশন।