জার্মানি সম্পর্কে অবাক করা কিছু তথ্য!
জার্মানির নাম শুনলেই নিশ্চয়ই তৎকালীন নাৎসি দলের প্রধান নেতা ও প্রেসিডেন্ট এডলফ হিটলারের কথা মনে পড়ে! কিন্তু বর্তমান জার্মানি হিটলারকে ভুলে দেশের আধুনিকায়নে মন দিয়েছে। তারা সেই পরিচয়ে নিজেদের পরিচিত করতে একদমই নারাজ।বর্তমান বিশ্বে শাসন এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে দেশটি বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ এবং প্রশংসার দাবিদার। এখনকার জার্মানি পুরোপুরি হিটলারের সাম্রাজ্যবাদী চিন্তার পরিপন্থী। সেইসঙ্গে দেশটি বেশ কিছু নতুন পরিবর্তন সাধন করেছে যেগুলো বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। চলুন জেনে নেই জার্মানি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-
প্রযুক্তি ও প্রকৌশলের উন্নয়নের সঙ্গে বদলে গেছে জার্মানি। প্রযুক্তিগত কারণেই মূলত ইউরোপ মহাদেশের শীর্ষ দেশগুলোর একটি জার্মানি। এদেশের প্রকৌশলীরাই মূলত জার্মানিকে ইউরোপের সবচেয়ে বিকশিত দেশ হিসেবে আত্নপ্রকাশ করিয়েছে। যার সুবাদে প্রযুক্তির দৌড়ে জাপানের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারা। বিশ্বের সবচেয়ে নামী এবং বিখ্যাত গাড়ি কোম্পানি মার্সিডিজ, অডি, পোরশা, বিএমডব্লিও জার্মানির প্রতিষ্ঠান। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে বিক্রিত গাড়ির কোম্পানি ভলকসোয়াগনও দেশটির! জার্মানিতে বুলেট ট্রেন বেশ কয়েকবছর ধরেই চলছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাড়ি উৎপাদনের প্ল্যান্ট উলস্পার ভলকসোয়াগন দেশটিতেই অবস্থিত।এই কোম্পানি প্রতিবছর ৪ কোটি গাড়ি তৈরি করে থাকে এবং তাদের ফ্যাক্টরির আয়তন এতোটাই বিশাল কর্মচারীরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে সাইকেল ব্যবহার করে থাকে!
জার্মানি নিয়ে কথা উঠলেই চলে আসে জার্মান অটোবানের কথা। জার্মান অটোবানের পুরো নাম হচ্ছে বুন্দেস অটোবান। যার অর্থ হচ্ছে ফেডেরেল মোটরবাইক। মূলত এটা জার্মানির একটি হাইওয়ে সিস্টেম। এটির বিশেষত্ব হচ্ছে এখানে কোনো গতি লিমিট নেই।কেউ চাইলে তার ইচ্ছেমতো দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাতে পারবে৷ কোনো আইন বা শাস্তি নেই এক্ষেত্রে। তবে গতি লিমিট নেই বলে এটিকে যদি বিপজ্জনক মনে করা হয় তাহলে সেটি ভুল ধারণা।কারণ এই হাইওয়ে বিশ্বের নিরাপদ হাইওয়েগুলোর মধ্যে অন্যতম।
জার্মানির জেলের নিয়ম-কানুন আপনাকে অবাক করতে বাধ্য!দেশটির জেল থেকে কেউ পালাতে চাইলে তাকে বাঁধা দেয়া হয় না। কারণ জার্মানির আইনে উল্লেখ আছে, প্রত্যেকের স্বাধীন এবং মুক্ত জীবন-যাপনের অধিকার রয়েছে। জার্মানির সৈনিকদের আদেশ দেয়া হয়, যদি তারা বুঝতে পারে তাদের এমন কিছু করতে বলা হচ্ছে যেটি মানুষের অস্তিত্ববিরোধী তাহলে তারা সেটি থেকে বিরত থাকতে পারে।
ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুখবর হলো! জার্মানিতে কলেজে পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না। এমনকি বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্যও রয়েছে স্কলারশিপের ব্যবস্থা।শরণার্থী ইস্যুতেও জার্মানির উদ্যোগ বেশ প্রসংশনীয়। সিরিয়া যুদ্ধের শরণার্থীদের সবচেয়ে বেশি আশ্রয় দিয়েছিলো তারা। কারণ দেশটি অতীতে এর থেকেও বড় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলো। হিটলার এবং তার অনুসারীরা এক বিশেষ ধরনের স্যালুট করতো যাকে নাৎসি স্যালুট বলা হয়। বর্তমানে যদি জার্মানিতে কাউকে এই স্যালুট করতে দেখা যায় তাহলে তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
জার্মানি আয়তনে খুব বেশি বড় না হলেও এখানে বিশ্বের সবচেয়ে অর্থ্যাৎ প্রায় চারশো চিড়িয়াখানা রয়েছে। জার্মানির রাজধানী বার্লিনের বার্লিন জুওলজিক্যাল গার্ডেনে প্রায় হাজার ৫০০ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে৷ বিখ্যাত দুই কোম্পানি এডিডাস এবং পিউমার উৎপত্তি দেশটিতেই হয়েছিলো এবং এই দুই কোম্পানির যাত্রা শুরু করেছিলো এডলফ এবং রুডলফ ড্যাসলার নামের দুই ভাই। প্রথমে যার নাম ছিলো ড্যাসলারস ব্রাদার সু ফ্যাক্টরি। কিন্তু ১৯৪৮ সালে দুইভাই এর মধ্যে বিভক্তির ফলে কোম্পানিটি বিভক্ত হয়ে জন্ম নেয় এডিডাস এবং পিউমা।