জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নেই ভারতের : হাইকমিশনার
জামায়াতে ইসলামের মতো কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। বাংলাদেশের ও ভারতের বর্তমান সরকারের মধ্যে গত তিন বছরে ৯২টি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ভারতীয় অর্থায়নের এদেশে যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো রয়েছে তার ধারাবাহিকতা চায় তার দেশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শীর্ষ কূটনৈতিক সাংবাদিকদের একটি দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শ্রিংলা বলেন, কোনো রাজনৈতিক জোট জামায়াতের কোনো চিহ্নিত নেতাকে মনোনয়ন দিচ্ছে কি না- সে ব্যাপারে ভারত নজর রাখছে। যদি কোনো জোট জামায়াতের নেতাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে সে ব্যাপারে ভারতের বলার কিছু নেই, তবে বাংলাদেশের মানুষই এ ব্যাপারে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনের অনুরোধে ভারত পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়েছিল। এবারও নির্বাচন কমিশন চাইলে ভারত পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই ধারণামূলকভাবে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার নির্বাচনে ভারত-চীন প্রভাবের কথা বলে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে এটা সত্য নয়। বরং চীনের সঙ্গে ভারতের চমত্কার সম্পর্ক রয়েছে এবং আফগানিস্তানে ভারত ও চীন যৌথভাবে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে ভারতের কোনো মাথা ব্যথা নেই স্মরণ করিয়ে দিয়ে শ্রিংলা বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকেই প্রথম অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
তিনি জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে তার দেশের মোটেও আগ্রহ নেই। ক্ষমতাসীন দল, বিকল্পধারাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার বৈঠক ছিল কূটনৈতিক কর্মপরিকল্পনারই অংশবিশেষ। বৈঠকগুলো ভিন্নভাবে নেয়ার সুযোগ নেই বলেও বিষয়টি স্পষ্ট করেন তিনি।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি জানিয়ে শ্রিংলা বলেন, দুই দেশের সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষায় সেখানে সহায়ক পরিবেশের প্রয়োজন। দুই দেশের সহায়ক পরিস্থিতি প্রয়োজন। দুই দেশের সম্পর্ক কৌলশগত অংশীদারিত্বের থেকেও বেশি গভীর পর্যায়ে গেছে।
দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ২৪টি চিঠি, একাধিক ফোনকলসহ বেশ কয়েকটি সফর এবং একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রায় চার হাজার আমলা ও প্রায় তিন হাজার বিচারবিভাগের কর্মকর্তা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বাংলাদেশে যখনই কোনো জেলা বা উপজেলায় ভ্রমণে গেলে সেখানে জেলা প্রশাষক বা উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা ভারতীয় প্রশিক্ষিত পাই। সেখানে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা পাই।