‘স্টপ হিম’
নির্বাচনী মাঠে তারেকের উপস্থিতি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত। দুই দেশের কূটনীতিকরাই বিএনপি নেতাদের কঠোর বার্তা দিয়েছেন। বলেছেন, ‘স্টপ হিম।‘ দুই দেশের কূটনীতিক সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। দুই দেশেরই তারেক জিয়ার ব্যাপারে তীব্র আপত্তি রয়েছে।
বিএনপির একজন শীর্ষস্থানীয় নেতার সঙ্গে আজ ভারতীয় দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা সাক্ষাৎ করেন। তারা নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে বিএনপি নেতাদের কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। একপর্যায়ে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে তারেক জিয়ার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ভারতের কূটনীতিক। তারা বলেন, ‘তারেকের ব্যাপারে আমাদের আপত্তি আছে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভারত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছিল ৪ শর্তে। এই শর্তগুলোর মধ্যে প্রথম শর্তই ছিল তারেক নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকবে। তারেকের ব্যাপারে ভারতের প্রধান আপত্তি যে সব কারণে, সেগুলো হলো:
১. ভারত মনে করে, তারেক জিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ রয়েছে। তারেক আইএসআই দ্বার নিয়ন্ত্রিত।
২. ভারত মনে করে, তারেক ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সহযোগিতা দিয়েছে। উলফাদের জন্য আনা ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালানে তারেকের ভূমিকা ছিল।
৩. ২০০১ সালে তারেক ভারতের কাছে যে অঙ্গীকারগুলো করেছিল, ক্ষমতায় যাওয়ার পর তার একটিও বাস্তবায়ন করেনি। তারেককে বিশ্বাস করা যায় না।
একাধিক সূত্র বলছে, বাংলাদেশে ভারসাম্য এবং জবাবদিহিতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চেয়ে আসছে। আওয়ামী লীগ যেন সংলাপে রাজি হয় সেজন্যই মার্কিন উদ্যোগ এবং পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। সেসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে একটা সমঝোতা হয়েছিল। তারেক এবং বেগম জিয়া না থাকার শর্তে দুই দেশ সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করার সমঝোতা করেছিল। দুই দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ড. কামাল হোসেন এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঐ বৈঠকে ড. কামাল বলেছিলেন, আপনারা শুধু সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করুন। জনগণ যেন ভোটের মাধ্যমে তার মতামত দিতে পারেন।’ ঐ বৈঠকেই মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ‘তারেক জিয়া কেবল একটি পদ নিয়ে আছেন। বিএনপি আমি চালাচ্ছি।’ ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশই দুই নেতাকে সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তারেক সক্রিয় হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভারতের কূটনীতিকরা মনে করছেন, পাকিস্তানের ইঙ্গিতেই তারেক সক্রিয় হয়েছে। এ কারণেই ভারত অবিলম্বে তারেককে থামাতে বলেছে। এদিকে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার বাংলাদেশে এসেছেন। সহকর্মীদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই তাঁকে তারেক জিয়ার প্রসঙ্গে ব্রিফ করা হয়েছে।