পেটের চর্বি ঝরাতে বাদ দিন খাবারগুলো
মেদশূন্য শরীর পেতে কে না চান! তবে পেটের চর্বি নিয়ে সকলেই বেশ উদ্বিগ্ন থাকেন। এই বুঝি একটু বেশি খাওয়া হয়ে গেলো তো পেটের চর্বি বেড়ে গেলো!
এ বিষয়ে অনেকেই সজাগ থাকেন। আর তাইতো পেটের মেদ ঝরাতে জিমে অক্লান্ত পরিশ্রমও করেন। তবে জানেন কী? কয়েকটি খাবারের জন্য হয়তো আপনার সকল পরিশ্রম বৃথা যাচ্ছে। অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই! জ্বি, আপনি যতই পরিশ্রম আর ডায়েট অনুসরণ করুন না কেনো পেটে গ্যাস জমার ফলে সেখানে মেদ জমছে। এজন্য গ্যাসজাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত। জেনে নিন এমনই কয়েকটি খাবার সম্পর্কে-
১. দই
টকদই পরিপাকতন্ত্রের জন্য অধিকতর উত্তম হওয়া স্বত্ত্বেও কারণ এতে থাকা প্রোবোটিক্স হজম প্রক্রিয়ায় বাঁধা দেয়। অবশ্যই মিষ্টি ও সুগন্ধযুক্ত দই এড়িয়ে যেতে হবে। কারণ এতে উচ্চমাত্রায় চিনি রয়েছে। যা পেটে গ্যাস জমায়।
২. আটা বা ময়দা
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাই এবং গমের মতো শস্যগুলোতে ফ্রাক্টন ও কার্ব রয়েছে যা হজম করা কঠিন। এবং এগুলো অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধতে সাহায্য করে। যার ফলে গ্যাষ্ট্রিক ও হজমে সমস্যা হয়ে থাকে।
৩. তরমুজ
তরমুজ খাওয়ার পরবর্তী মুহূর্তে প্রায় প্রত্যেকেই গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যায় ভুগে থাকেন। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক মিষ্টি উপাদান ফ্রুক্টোস। এই উপাদানটি সকলের অন্ত্র পরিপাক করতে পারে না। তাই গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে। এ সমস্যা থাকলে অবশ্যই আপনি তরমুজ পরিহার করবেন।
৪. পেঁয়াজ
আপনি জেনে অবাক হবে যে, শষ্যদানায় থাকা ক্ষতিকর ফ্রাক্টন ও কার্ব রয়েছে পেঁয়াজের মধ্যেও। লক্ষ্য করে দেখবেন অতি মাত্রা পেঁয়াজ ব্যবহৃত রেসিপি খেলে আপনি গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যায় ভুগবেন। কারণ এ দুটি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার হজম প্রক্রিয়ায় বাঁধা দিয়ে থাকে। পেঁয়াজের পাশাপাশি রসুনও পেটে সমস্যা বাড়ায়।
৫. দুধ
পনির কিংবা দুগ্ধজাত খাবারগুলোতে উচ্চতামাত্রা চিনি থাকায় এসব খাবার অতিরিক্ত খেলে হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন দুধ খাওয়ার অভ্যাসের কারণে পেটে মেদ জমতে পারে। যার ফলে পরবর্তী গর্ভধারণসহ নানা সমস্যা হতে পারে।
৬.ডাল
যদিও কিছু ডাল হাড়ের জন্য ভাল। তবে কিছু ডাল রয়েছে যেগুলো অন্ত্রে গ্যাস জমায়। যেমন- মটরশুটি, কলাই, মুগ ও মশুর ডাল, সয়াবিন ইত্যাদি শস্যের বীজে উচ্চতর ফাইবার থাকায় তা হজম করা কঠিন। আর যেকোনো খাবার হজম না হলে পেটে গ্যাস জমতে শুরু করে।
৭. ব্রোকলি
এই সবজির অনেক স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে তবুও এতে রফিনোজ নামক এমন এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা পরিপাকতন্ত্র ভেঙ্গে ফেলতে পারে না। শুধু ব্রোকলি নয় বরং ফুলকপি, ব্রুসেল স্প্রাউটেও এই উপাদানটি রয়েছে।
৮. আপেল
সকলেই নিশ্চয়ই জানেন মেদ ঝরাতে এই ফলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে জানেন কী? রাতে আপেল খেলে তা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে দূর্বল করে দেয়। এতে থাকা ফাইবার, ফ্রুকোজ এবং সরিবিটোলের উপস্থিতি অন্ত্রে গ্যাস জমায়।
৯. কৃত্রিম মিষ্টি
যেকোনো মিষ্টিই শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে অনেকেই চিনির বদলে খাবারে কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করে থাকেন। জানেন কী? এসব কৃত্রিম মিষ্টিতে স্যাকারিনের পরিমান অনেক বেশি থাকে। যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কৃত্রিম মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে এজন্য হজম হয় না। যার ফলে পেট ফুলে থাকাসহ গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যা বাড়তে পারে।
১০. কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস
কোল্ড ড্রিংসে চুমুক না দিতে পারলে অনেকের লাঞ্চ কিংবা ডিনার অসম্পূর্ণ থেকে যায়! তবে জানেন কী? কোকাকোলা, পেপসিসহ বিভিন্ন এনার্জি ড্রিঙ্কসে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড ও গ্যাস সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি পরিপাকতন্ত্রে বুদবুদ সৃষ্টি করে। যা হজম প্রক্রিয়ায় বাঁধা দেয়। তাই আপনি যতই ডায়েট চার্ট মানুন আর যতই ওয়ার্কআউট করুন না কেন পেটে মেদ জমবেই। তাই উপরের খাবারগুলো পরিহার করতে পারলেই মেদ ঝরানোর রেসে আপনি এগিয়ে যাবেন।