দেবহাটায় মিশ্র ফলবাগান ও সবজি চাষে অভিনব সাফল্য দুলাল ঘোষ
দেবহাটার রামনাথপুর গ্রামে মিশ্র ফলবাগান ও সবজি চাষ করে অভিনব সাফল্য এনেছে দুলাল ঘোষ। মিশ্র ফলের বাগান ও সবজি চাষ করে নিজের ভাগ্য বদলানোর পাশাপাশি দেবহাটায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন তিনি। তার সাফল্য দেখে এলাকায় আরো অনেকে এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মিশ্র ফল ও সবজি উৎপাদনে ঝুঁকেছেন।
দেবহাটা উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের রামনাথপুর গ্রামের দুলাল ঘোষ দুই বছর আগে প্রথমে পরিক্ষা মুলক ভাবে মাত্র এক বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন ফল ও সবজি বাগান। প্রথম বছরেই ভালো সফলতা পান তিনি। এরপর ধীরে ধীরে ওই বাগানের আয় থেকে এখন ৮ বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলেছেন সু-বিশাল ফল ও সবজির বাগান।
দুলাল ঘোষের সাথে কথা বললে তিনি জানান, অনেক চিন্তাভাবনা করে দেখেছি যদি মিশ্র ফল সহ সবজির চাষ করা যায় তাহলে খুব ভালো হবে। তাই তিনি ১১শত থাই পেয়ারা গাছ, ৬শত বরই গাছ, ২শত ৫০টি বারি মাল্টা-১ এবং জমির পাশ দিয়ে ৫শত কলাগাছ ও মেটে আলু সহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে লাখ লাখ টাকা উপার্জন হচ্ছে। সেই সাথে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হচ্ছে এই বাগানকে কেন্দ্র করে। গত মৌসুমে মিশ্র পদ্ধতিতে ফল ও সবজি চাষ করে অনেক টাকা উপার্জন হয়েছে। এতে আমি অনেক খুশি।
এছাড়া বছরের বার মাসই ফল ও সবজি ঢাকায় পাঠিয়ে ভাল অর্থ পাচ্ছি। আমার এ সফলতা দেখে এলাকার অনেক চাষী আমার কাছে পরামর্শ ও বীজ নিতে আসে।
তার এ সাফল্যে এলাকায় এক নজির সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। এছাড়াও তাকে দেখে অনেকে এ পদ্ধতিতে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন।
রামনাথপুর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, দুলাল ঘোষ’র সফলতায় আমরা নিজেদের জমিতে সবজিসহ ফলের চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। ইতোমধ্যে অনেকেই মিশ্র পদ্ধতিতে ফল ও সবজি চাষ শুরু করেছেন।
দুলাল ঘোষের প্রকল্পে প্রতিদিন কাজ করছেন অন্তত ৮ থেকে ১০ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক। প্রতিদিন বাগান দেখাশোনা করছেন তারা। তার বাগানের বদৌলতে এখানে ৮ থেকে ১০জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তার বাগানে ৩০ থেকে ৪০ প্রজাতির ফলমূল ও সবজি চাষ হচ্ছে।
গত সোমবার দুলাল ঘোষের ফল ও সবজির বাগান পরিদর্শন করেন, দেবহাটা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জসিমউদ্দীন, উপ-সহকারী উদ্ভীদ সংরক্ষণ অফিসার শাহাজান আলী, উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আলহাজ্ব আহাদ আলী খান ও জাহিদুজ্জামান।
এ সময় দেবহাটা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জসিমউদ্দীন জানান, দুলাল ঘোষ এ উদ্যোগে আমি অত্যন্ত আনন্দিত, তিনি নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি মানুষের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে অর্থনীতিতে যোগ করছেন নতুন মাত্রা।