বাদশাহর নামে বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ মসজিদ নির্মাণ করতে চায় সৌদি
সৌদি বাদশাহর নামে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মসজিদটি নির্মাণে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে সৌদি সরকার। রাজধানী ঢাকায় কয়েক বিঘা এলাকাজুড়ে নির্মিত হবে এই সুবিশাল মসজিদ। এটি নির্মাণে যত ব্যয় হবে তার পুরোটুকু দিতেও সৌদি সরকারের কোনো আপত্তি নেই। মসজিদটি নির্মাণের জন্য জমি নির্বাচন এবং আর্কিটেকচারাল ডিজাইন ও আনুষঙ্গিক খরচের বাজেট দিলে তারা মসজিদ নির্মাণের সমুদয় অর্থ বহন করবে।
সোমবার রাতে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে সফররত সৌদি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি দলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাদশাহর নামে দেশের সর্ববৃহৎ মসজিদ নির্মাণে তাদের ইচ্ছার কথা জানান তারা। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণকারী নীতি-নির্ধারকরা ঢাকায় সর্ববৃহৎ মসজিদ নির্মাণে সৌদি সরকারের ইচ্ছা পূরণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে জানান।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি দলের একাধিক সদস্য জানান, বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মোট ৫৬০টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগের কথা জানিয়ে সৌদি প্রতিনিধি দলের সামনে একটি ভিডিও উপস্থাপনা করেন। এ সময় তারা জানান, ইতোমধ্যেই সারাদেশে একই ধরনের ৫৬০টি মডেল মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ৯টি মসজিদ নির্মিত হবে। ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে ১৩ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সরকার মসজিদ নির্মাণে সৌদি সরকারের আর্থিক সহায়তা কামনা করলে সৌদি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এ উদ্যোগেকে স্বাগত জানিয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণে সফলতা কামনা করেন। তারা ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণে আর্কিটেকচারাল ডিজাইন ও সম্ভাব্য ব্যয় জানতে চান। তারা এক মাসের মধ্যে কত অনুদান দেবেন তা জানিয়ে দেন। তবে তারা এ মুহূর্তে রাজধানী ঢাকায় একটি বড় মসজিদ স্থাপন করতে চান।
ধর্ম সচিব আনিছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে বাদশাহর নামে দেশের সর্ববৃহৎ মসজিদ নির্মাণে সৌদি সরকারের ইচ্ছাপ্রকাশের খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তারা রাজউকের সেঙ্গে আলাপ করে পূর্বাচলে পাঁচ-ছয় বিঘা জমি খুঁজে করবেন।
সভা শেষে ধর্মসচিব আনিছুর রহমান জানান, সারাদেশে মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগের প্রশংসা করে তারা আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে নীতিগতভাবে রাজি হয়েছেন। তবে তারা এক মাস পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন।
সভায় বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান। আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মো. জয়নুল আবেদিন, ধর্মসচিব মো. আনিছুর রহমান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বহিঃসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শামসুল অালম, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. আজিজুর রহমান।
সৌদি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সৌদি অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাহাদ আল ওতাইবি। দলের অন্য সদস্যরা হলেন সৌদি ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স, দাওয়াহ ও গাইডেন্স বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিস ডাইরেক্টর শেখ আহমেদ আলী রুমি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকৗেশলী মুতলাক আল খাতানি, অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি টারকি আল আলাবি ও বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স।