আশাশুনিতে ৬ শিয়াল নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নের গুনাকরকাটি গ্রামে শেয়ালের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে শিয়াল নিধনের ঘটনায় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে বন্যপ্রাণী নিধনের বিরুদ্ধে সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে।
গুনাকরকাটি গ্রামে বেশ কিছুদিন যাবৎ শেয়ালের ব্যাপক উপদ্রব দেখা দেয়। রেজাউল করিমের স্ত্রী নাছিমাকে সন্ধ্যায় ঘরের বারান্দায় শুয়ে থাকা অবস্থায় শিয়ালে কামড়ে দিলে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কাশেম গাজীর স্ত্রীকে ৫টি শিয়ালে তাড়া করলে অজ্ঞান হয়ে যায়। সকালে ও বিকালে ছেলেমেয়েরা মক্তবে ও স্কুলে যাতয়াতের পথে শিয়ালের তাড়া খেয়ে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়া গ্রামের বহু হাঁস-মুরগি ও ছাগল শিয়াল ধরে নিয়ে গেছে। মৎস্য ঘেরের মাছ রাতে শিয়াল ধরে ধরে খেয়ে ফেলছে। এতে গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হলে গ্রামবাসী মিলে শেয়াল ধরা ও তাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা করে। এমনই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার গ্রামবাসী একত্রিত গয়ে শেয়াল তাড়ানোর সংগ্রামে নেমে পড়ে। এ সময় উৎসুক ও বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে ৬টি শিয়াল মারা পড়ে। বন্যপ্রাণী হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামালের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফফার তাসনীন তাৎক্ষণিক ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে নির্দেশ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন, সমাজ সেবা কর্মকর্তা ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে একটি দল সেখানে গমন করেন এবং বিকালে বনবিভাগ খুলনা অঞ্চলের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থানে আসেন। এ সময় গ্রামবাসী লিখিত ভাবে জানান, তারা আইন সম্পর্কে কিছুই জানেননা, ভুল বশত ছেলেমেয়েরা কয়েকটি শিয়াল মেরে ফেলেছে। এজন্য তারা দুঃখিত ও মর্মাহত। ভবিষ্যতে তারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে মেনে চলবেন বলে অঙ্গীকার করেন। কর্মকর্তারা গুনাকরকাটি বাজারে উপস্থিত শত শত মানুষকে বন্য প্রাণী আইন সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন এবং ভবিষ্যতে পশু বা বন্যপ্রাণী মারা হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া কিংবা আইনের আওতায় আনা হবে বলে ঘোষণা দেন। উপস্থিত সকলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে মেনে চলবেন বলে অঙ্গীকার করেন।