জাপা জোটের মহাসমাবেশ আজ
জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের উদ্যোগে আজ শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সকাল ১১টায় শুরু হবে মহাসমাবেশের কার্যক্রম।
সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জোট প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন। বিরোধীদলীয় নেতা ও দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাপা এবং জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তৃতা করবেন।
সমাবেশ থেকে আগামী নির্বাচন, জোট গঠনসহ রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন এরশাদ। পাশাপাশি তিনি দলীয় নেতাকর্মীদেরও নানা ধরনের দিক-নির্দেশনা দেবেন। মহাসমাবেশ সফল করতে সবরকমের প্রস্তুতিও শেষ করা হয়েছে। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নেয়া হয়েছে উদ্যোগ। বড় ধরনের শোডাউেনর মধ্যদিয়ে জাতীয় পার্টির নেতারা নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিতে চান এদিন।
এরইমধ্যে পোস্টার-ফেস্টুনে সয়লাব হয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশ। দলীয় পোস্টারের পাশাপাশি শীর্ষ নেতাদের ছবিসহ ‘চলো চলো ঢাকা চলো, এরশাদের মহাসমাবেশ সফল করো’ শিরোনামে নানা রঙের পোস্টারও শোভা পাচ্ছে নগরীর অলিগলিতে।
শেষ হয়েছে মঞ্চ তৈরির কাজ। মাঠের চারদিকে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার-ফেস্টুনে সাজানো হয়েছে সমাবেশস্থল। শুক্রবার বিকেলে থেকে রাত অবধি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উপস্থিত থেকে জাপা ও জোটের শীর্ষনেতারা কর্মী-সমর্থক এবং দায়িত্বশীলদের দিয়েছেন বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা। জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ দল ও জোট নেতারা মাঠের প্রস্তুতি পরিদর্শন করার পর মতবিনিময় করেছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে।
মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে গেলো কয়েকদিন বেশ সক্রিয় দল ও জোটের নেতাকর্মীরা। কর্মসূচি সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন নেতারা। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। সারাদেশে এরশাদ, রওশন ও শরিক দলের শীর্ষনেতা মাওলানা এম মান্নানসহ বিভিন্ন নেতার ছবি দিয়ে মহাসমাবেশের পোস্টার লাগানো হয়েছে। ঢাকা শহরের অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে মহাসমাবেশের ব্যানার, পোস্টার ও নানান স্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, মহাসমাবেশে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ যোগ দেবেন। জাপা জাটের মহাসমাবেশ হবে রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। দেশবাসীর জন্য আসেব নতুন বার্তা।
পরির্দশনে জাপা মহাসচিবের সঙ্গে ছিলেন ঢাকা মহাপনগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, উত্তরের সভাপতি ফয়সল চিশতি ও জহিরুল আলম রুবেলসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
মহাসমাবেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাপার সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, জাতীয় পার্টি ও সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরিক দলগুলো সবশক্তি দিয়ে মহাসমাবেশ সফল করবে। তিনি বলেন, সারাদেশে এরশাদ ও লাঙ্গলের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। নির্বাচনের আগে পার্টি ও জোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের আত্মবিশ্বাস আরো দৃঢ় করতে এবারের মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। এখান থেকে জাতীয় পার্টির নতুন যাত্রা সূচিত হবে। তিনি জানান, সমাবেশে শুধু ঢাকা শহর থেকে অর্ধ লক্ষাধিক নেতাকর্মী অংশ নেবেন। এছাড়া শ্যামপুর কদমতলী থেকে অন্তত দশ হাজার নেতাকর্মী সমর্থক মহাসমাবেশে অংশ নেবেন।
এদিকে মহাসমাবেশ সফল করতে শুক্রবার ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সব থানা ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুতি সভা করেছে দলের নেতাকর্মীরা। গত সাত দিন ধরে মহানগর দক্ষিণের পক্ষ থেকে প্রতিটি থানায় প্রচার মিছিল ও পথসভা করা হয়েছে। সমাবেশের সফলতা কামনা করে শুক্রবার সকালে শ্যামপুরে মিছিল করেছে শ্যামপুর-কদমতলী থানা জাতীয় পার্টি। এদিকে পার্টির কাকরাইল কার্য়ালয়ে জাতীয় যুব সংহতি, ছাত্র সমাজ, মহিলা পার্টি, কৃষক পার্টি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি ও শ্রমিক পার্টি আলাদা আলাদা প্রস্তুতি সভা করেছে।
অন্যদিকে মহাসমাবেশ সফল করতে সম্মিলিত জাতীয় জোটের শরীক ইসলামী ফ্রন্টও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। তারাও কয়েকদিন ধরে দফা দফায় বৈঠক করেছেন সমাবেশ সফল করার বিভিন্ন করণীয় নিয়ে। এ বিষয়ে ইসলামী ফ্রন্টে মহাসচিব এম মতিন বলেন, মহাসমাবেশ সফল করতে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সারাদেশ থেকে আমাদের কমপক্ষে পঞ্চাশ হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে অংশ নেবেন। তিনি জানান, এরইমধ্যে অনেকেই ঢাকায় চলে এসেছেন।
তবে শুক্রবার জোটের শীর্ষ আরেক নেতা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমানের মৃত্যুতে সমাবেশ আয়োজনে নেমেছে শোকের ছায়া। এতে সমাবেশে অংশ নেয়ার প্রস্তুতিতেও ঘটতে পারে খানিকটা ছন্দপতন।