যে কারনে দলে নেই মুমিনুল, সৌম্য ও মোসাদ্দেক
বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে তামিম ইকবালের সাথে অন্য এক ওপেনারের শূন্যতায় ভুগছে বোর্ড। সৌম্য সরকারকে বারবার সুযোগ দিলেও তিনি পারেন নি ধরে রাখতে। ওদিকে ওয়ানডে দলে জায়গা পেলেও থিতু হতে পারছেন না মুমিনুল হক। বারবার সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের।
বারবার সুযোগ হারিয়েছেন তিন ক্রিকেটার। আসন্ন জিম্বাবুয়ে সিরিজে জাতীয় দলে তাদের জায়গা হয়নি। তিন ক্রিকেটারকে দলে না রাখার ব্যাখ্যা দিয়েছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশার।
মুমিনুল হক : মুমিনুল বাদ পড়া একটু দুর্ভাগ্য বলব। তাঁর জন্য আমার সহানুভূতি। আমি মনে করি তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ার কখনই শেষ হয়ে যায় নি। আমার মনে হয় ওয়ানডেতে তাঁর দেয়ার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু আমাদের কিছু ক্রিকেটারকে দেখতে হত। এটা আমাদের সুযোগ, কিছু খেলোয়াড় দেখে নেয়া। সামনে আমাদের অনেকগুলো সিরিজ আছে। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড সিরিজের পর বিশ্বকাপ আছে। এই জিম্বাবুয়ে সিরিজটা সুযোগ ছিল, কিছু প্লেয়ারকে দেখে নেয়ার।
আমাদের যদি সাকিব, তামিম থাকত তাহলে আমরা আরও খেলোয়াড় দেখতে পারতাম। কিন্তু এখন আমাদের সুযোগটি নেই। আমাদের সেরা কম্বিনেশন ও অভিজ্ঞতার দিকে নজর দিয়ে দল সাজাতে হয়েছে। মুমিনুল এশিয়া কাপে দুটি ম্যাচ খেলল। আমি বলব দুটি ইনিংস একজন ব্যাটসম্যানের জন্য যথেষ্ট না। যদি ওই দুই ইনিংসে রান করত, তাহলে ওর জন্য ভাল হত। যেহেতু রান করতে পারেনি তাই আমাদের নতুন দুই একজন প্লেয়ারকে দেখতে হচ্ছে তাই বাদ পড়েছে।
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত : মোসাদ্দেকের ফর্ম নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট নই। যেখানে সে ব্যাট করছে, সাত নম্বরে, সেখানে সে কার্যকরী ব্যাটিং করতে পারছে না। তাঁকে ব্রেক দেয়া হচ্ছে। আশা করি সে ঘরোয়া ক্রিকেটে রানে ফিরবে। সাম্প্রতিক সময়ে ওর ফর্মটা ভাল যাচ্ছে না।
সৌম্য সরকার : ৭ নম্বরে আমরা একজন বোলিং অলরাউন্ডারের খোঁজে ছিলাম। তাঁরা (আরিফুল ও সৌম্য) মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। তাদের কাছ থেকে আমরা প্রথমে ব্যাটিং ও পরে বোলিং আশা করি। ৭ নম্বরে আমাদের আসলে বোলিং অলরাউন্ডার দরকার, যে মূলত বোলিং করে থাকেন, সাথে ব্যাটিংটা করতে পারবেন। এই জন্য আমরা সাইফ উদ্দিনকে এই সিরিজে নিয়েছি। আমরা একটু দেখতে চাচ্ছি, এই সিরিজটা আমাদের দেখার সুযোগ। যখন আমরা বাইরে খেলতে যাব, তখন আমাদের বোলিং এর দরকার বেশি লাগবে, ব্যাটিং এর তুলনায়। আমাদের নিচের সারির ব্যাটিংটা একটু বেশি বড় হয়ে যায়, ৭ নম্বর পরে আসলে আমাদের খুব একটা ব্যাটিং থাকে না।
তাহলে একজন বোলিং অলরাউন্ডার যদি আমরা সেট করতে পারি, তাহলে ভাল হবে। সৌম্য কিন্তু বোলিং খুব একটা খারাপ করে না। যাই একটু বোলিং করে, যথেষ্ট ভাল বোলিং করে থাকে। কিন্তু সে একজন জেনুইন বোলার নয়। আরিফুল হক কিন্তু এসেছিল বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। কিন্তু ওভার দ্য ইয়ার্স তাঁর ব্যাটিংটাই বেশি ফোকাস পেয়েছে। আমরা তাঁর কাছ থেকে ১০ ওভার বোলিং এর কথা চিন্তা করতে পারছি না। ও যেই ম্যাচে খেলেছে, খুব একটা বোলিং করার সুযোগ পায়নি। মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার ক্যাটাগরিতেই খেলেছে সে। আমরা এমন একজনকে চাচ্ছি, যে কিনা ১০ ওভার বোলিং করতে পারবে ও দরকার হলে ব্যাটিং করবে।
সাকিব ও তামিমের অনুপস্থিতিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে চাননি নির্বাচকরা। তাই সম্ভাব্য সেরা দলই নির্বাচন করেছেন। জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে তাই সেরা ফলের প্রত্যাশা করছেন জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। তার ভাষ্য, ‘আমার মনে হয় এই সিরিজটা বেশ উত্তেজনাপূর্ণ হবে। কাল জিম্বাবুয়ের ম্যাচ দেখছিলাম, দল হিসেবে তাঁরা এখন অনেক ভাল। অনেক গোছানো দল। আমাদের জন্য এই সিরিজটি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ আমাদের দুইজন বড় পারফর্মার খেলতে পারছেন না। পারফর্মেন্সের সাথে তাদের অভিজ্ঞতাটার অভাবটা অনুভব করব এই সিরিজে। সব মিলিয়ে আমি আশাবাদী। আমার মনে হয় আমাদের দলের সেরা একাদশটা খারাপ না। যারা বাইরে আছেন তাঁরা যথেষ্ট ভাল খেলছেন এবং অনেক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসেছেন। আমি আশাবাদী, এই সিরিজটা ভালোই হবে।’