আজকের জনসভায় যে বার্তা দেবে বিএনপি
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ বিএনপি’র জনসভা। ২২ শর্তের বেড়াজালে তাদের এই জনসভার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। এরপরও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। একক সভার মাধ্যমে দলটি বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ঘটিয়ে সাংগঠনিক শক্তির জানান দিতে চাইছে দলটি।
একইসঙ্গে সোহরাওয়ার্দীর জনসভা থেকে একাদশ নির্বাচন সামনে রেখে সরকার, দেশবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের কিছু বার্তা দেবে বিএনপি।
জনসভা থেকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের প্রতি ৭ দফা দাবি এবং দেশবাসীর প্রতি ১২ দফা অঙ্গীকার ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
দাবিগুলো হলো-
১. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই জাতীয় সংসদ বাতিল।
২. খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তার বিরুদ্ধে দায়ের সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। সকল বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ফল প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা ও নতুন কোনো মামলা না দেয়া, পুরনো মামলায় কাউকে গ্রেফতার না করা, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সামাজিক গণমাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী-সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারদের মুক্তি।
৩. সরকারের পদত্যাগ ও সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা
৪. ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা।
৫. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে কোনো ধরনের বিধি-নিষেধ ছাড়াই দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা।
৬. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্র বাহিনী নিয়োগ।
৭. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা।
পাশাপাশি আগামী দিনের পথচলা ও দাবি আদায়ের সম্ভাব্য আন্দোলন নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের দেয়া হবে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা।
এজন্য সোহরাওয়ার্দীর জনসভায় দাওয়াত দেয়া হয়নি ২০ দলীয় জোটের শরিক দল বা নতুন উদ্যোগ জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কোনো নেতাকে। তবে জনসভা থেকে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যাপারে দেশবাসীর উদ্দেশে বিএনপি নিজেদের অবস্থানও তুলবে ধরবে বলে জানা গেছে।
এদিকে, জনসভার অনুমতি পাওয়ার পর দুপুরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভাস্থল ও প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন।
ঢাকা মহানগরের পাশাপাশি ঢাকা জেলা ও আশপাশের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল থেকে বিএনপিসহ অঙ্গদলের নেতাকর্মীরা জনসভায় অংশ নেবেন। এসব জেলা থেকে শনিবারই রাজধানীতে এসে অনেকে জড়ো হয়েছেন।
রোববার দুপুর দুইটা থেকে জনসভার মূল কার্যক্রম শুরু হবে। তবে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর।