আমার স্বামী সাইফুল্লাহ এখন হিংস্র রুপ নিয়েছে:সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রী রওশন আরা
পনের বছর আগে সে আমাকে ভালবাসার ভান করেছিল। এক রকম জোর করেই আমাকে বিয়ে করেছিল সে। আমি চাকুরী করতাম ওয়ার্লড ভিশনে। আর বিয়ের পর সে চাকুরি করতে দিলো না। বলেছিল ‘আমি যা কামাই করি তাই কে খায়। তোমার চাকুরির দরকার নেই’।
এখন সে দিনের অবসান ঘটেছে। সেই স্বামী সাইফুল্লাহ সরদার আমার অজান্তে পাপিয়া নামের এক নারীকে বিয়ে করেছে। পাপিয়া আগে তিন বিয়ে করেছে বহেরার বাবু, আঠারো মাইলের শিমুল ও কুলিয়ার মিলন কুমারকে। পাপিয়ার একটি মেয়ে শিশুও রয়েছে। এখন সেই পাপিয়াই আমার স্বামী সাইফুল্লাহর স্ত্রী। বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে ইটাগাছার বাঙ্গালের মোড়ে ,এক শিক্ষা অফিসারের বাসায়।
সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন ইটাগাছার রওশন আরা খাতুন তিনি বলেন, আমার স্বামী এখন হিংস্র রুপ নিয়েছে। দফায় দফায় সালিশ বিচার করে সে প্রতিমাসে আমাকে পাঁচ হাজার করে টাকা দিতে সম্মত হয়েছিল। পরে তা দেয়নি। আমার দুই ছেলে মেয়ে তামজিদ ও তানহা দুই জনেই মাদ্রাসার শিশু শ্রেণিতে পড়ে। স্বামীর সহযোগিতা না পাওয়ায় এখন পরিবারের ভরন পোষন চলছে না। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও টানতে পারছি না। তিনি বলেন সাইফুল্লাহ রইচপুর গ্রামের আবদুস সবুর সরদারের ছেলে। অঢেল টাকার মালিক। স্বপ্নীল ফিসের পার্টনার সে।
নয় মাস আগে পাপিয়াকে বিয়ে করার কথা জানিয়ে রওশন আরা বলেন, পাপিয়াকে নিয়ে ভারতে যায় হানিমুনে। পরে আমি বিষয়টি জানতে পারি। অনেক অনুরোধ করে বলেছি তুমি আমার ছেলেমেয়ের দিকে তাকাও। এ বাড়ি ও বাড়ি করে তুমি ভাগাভাগি করে থাকো। তাতে পাত্তা দিচ্ছে না সাইফুল্লাহ। রওশন বলেন তিনি বারবার অনুরোধের পরও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। বাধ্য হয়েই তিনি বিচার সালিশ চেয়ে অভিযোগ করেছেন পৌরসভায় দুইবার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ‘নিজ অধিকার’ এ সাতক্ষীরা থানায় তিন বার, ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়িতে একবার এমনকি গ্রাম সালিশেও। কিন্তু কোনো জায়গায় হাজির হয়নি সাইফুল্লাহ। বরং ইটাগাছা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ইসরাফিল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে সাইফুল্লাহ বলেছে ‘আমাকে ধরলে তিনি এখানে টিকতে পারবেন না। তাকে ট্রান্সফার করে দেবো। চাকুরি খেয়ে ফেলবো। কোনো থানা পুলিশের ক্ষমতা নেই আমাকে আটক করার। কারণ সে বিপদে পড়বে’। সাইফুল্লাহ এভাবেই নিজের ক্ষমতার জাহির করছে।
পাপিয়াকে বিয়ে করেছে জানতে পেরে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে স্বামী সাইফুল্লাহ সরদার আমাকে বলেছিল মামলা করো না। কয়েকদিন পর পাপিয়াকে ছেড়ে দেবো। তুমি ধৈর্য ধরো। কারও জানানোর দরকার নেই’। একথা বলার কিছুদিন পর সে চোখ উল্টে দেয়। এখন বলে আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। তার কথিত স্ত্রী পাপিয়া সুলতানা বলে দেখবি তবে আমাদের কেউ আছে কিনা।
রওশন বলেন আমি এখন হতাশ। আমার চোখে শুধুই অন্ধকার। দুটি শিশু সন্তান নিয়ে আমি এখন দাঁড়াবো কোথায়।
পাপিয়াকে বিয়ের পর ও আগে সাইফুল্লাহ আমাকে মারপিট করতো। গভীর রাতে টলতে টলতে বাড়ি ফিরতো। প্রতিবাদ করলেই মারতো আমাকে। এখন তাকে নেশায় পেয়েছে। ইয়াবা খায় সে। কালিগঞ্জের নাসির ও সাইফুল্লাহ এক সাথে ইয়াবা খায়। যতসব নষ্ট কাজ করে বেড়ায়।
রওশন আরা বলেন আমার অধিকার প্রতিষ্ঠা চাই। দেশের আইন অনুযায়ী সাইফুল্লাহর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করতে চাই। এ ব্যাপারে তিনি মানবাধিকার সংগঠন এবং সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।