মৃত্যুর আগে জাপাকে ফের ক্ষমতায় দেখতে চান এরশাদ
মৃত্যুর আগে জাতীয় পার্টিকে আবারো ক্ষমতায় দেখতে চান দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি আর গৃহপালিত বিরোধীদল হতে চায় না। আমরা নিজেরাই ক্ষমতায় যেতে চাই।
শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির তৃণমূল ও কেন্দ্রীয় নেতাদের এক যৌথ সভায় তিনি এই ইচ্ছা পোষণ করেন।
আগামী ৬ অক্টোবর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ বলেন, মহাসমাবেশ থেকে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সর্বাত্বক প্রস্তুতি নিয়ে দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। পাড়া মহল্লায় গণসংযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি নির্বাচনী কেন্দ্র কমিটি গঠন করে জাপার শাসনামলের উন্নয়ন ঘরে ঘরে পৌছে দেয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন এরশাদ।
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি একজন অত্যাচারিত ব্যক্তি। আমার মত অবিচার আর কোনো রাজনীতিবিদের প্রতি আর হয়নি। আমার জন্য চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বসানো হয়েছিলো বিশেষ আদালত। কিন্তু কি লাভ! আমার প্রতি অত্যাচার করে কি আপনারা ভালো আছেন? দেশ কি ভালো আছে? আমি ক্ষমতা ছাড়ার পর ২৮ দিনও দেশ শান্তিতে ছিলো না। শুরু হয়েছে খুন-গুম-সন্ত্রাস। আমরা দেশে আবারো শান্তি ফিরিয়ে দিতে চাই। আমাদের ক্ষমতায় যেতেই হবে। এ থেকে পিছু হটার কোনো সুযোগ নেই।
যৌথসভায় রাজধানীর উত্তর দক্ষিণ ও ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা উপজেলার নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে সভা রূপ নেয় জনসভায়। বর্তমান সংসদ সদস্যেদের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে সকাল থেকেই জড়ো হয় অনুষ্ঠান স্থলে।
যৌথসভায় জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, জাতীয় পার্টির সামনে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ এসেছে। নিজেরাই এবার ক্ষমতায় যাব। দলকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। এককভাবে ক্ষমতায় যাওয়াই এবার আমাদের লক্ষ্য। এবারের সংগ্রাম ক্ষমতায় যাওয়ার সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সংগ্রাম।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির শাসনামলে যেসব উন্নয়ন হয়েছে, তা আর কোন সরকারের আমলে হয়নি। বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে যেসব কাজ করেছি, তৃণমূলের নেতাদের, কর্মীদের সেসব সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। নতুবা তারা ভুলে যেতে পারে।
সভায় তৃণমূল নেতারা সমালোচনা করে বলেন, আগামী নির্বাচনের পর দল থেকে মন্ত্রী-এমপির সংখ্যা বাড়াতে হবে। তা না হলে দলের মধ্যে অসঙ্গতি দেখা দেবে। দলকে চাঙ্গা রাখতে হলে দলের মধ্যে ক্ষমতা বাড়াতে হবে। তাহলে আগামীতে জাতীয় পার্টি এককভাবে ক্ষমতায় আসতে পারবে।