খুলনার রূপসা থেকে সাইকেল চালিয়ে কোলকাতার হাওড়া ব্রীজ জয় করে ফিরলেন দুই তরুণ
রূপসা থেকে সাইকেল চালিয়ে ভারতের কোলকাতার হাওড়া ব্রীজ পর্যন্ত মাদকের বিরুদ্ধে প্রচারাভিযান করে এসেছেন খুলনার দুই সাইক্লিষ্ট। শুক্রবার বিকালে প্রচারভিযান শেষে খুলনায় ফেরার পথে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে কথা হয় সাইক্লিষ্ট এই দু’বন্ধু শরিফুল ইসলাম হিরণ ও বাহারুল ইসলামের সাথে।
মাদকবিরোধী সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে খুলনার দু’সাইক্লিষ্টের ভারত সফরকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। বলছেন, মাদকবিরোধী দেশ গড়তে হলে আগে যুব সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। ভারতীয় অ্যাপেক্স ক্লাব বালি ও বেহুল কৃষ্ণনগর ক্লাবের পক্ষ এই দু’সাইক্লিষ্টকে সংবর্ধনা ও সম্মাননা স্মারণ ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
ছোটবেলা থেকেই একসাথে পথচলা শরিফুল ইসলাম ও বাহারুল ইসলামের। শরিফুল ইসলামের পূর্ণ নাম শেখ শরিফুল ইসলাম হিরণ এবং পিতার নাম শেখ রাশিদুল ইসলাম। বাড়ি ডুমুরিয়ার রাজিবপুর গ্রামে। খুলনা সরকারি বিএল কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স সম্পন্ন করা হিরণ তিন ভাই-বোনের মধ্যে বড়। অপরজন বাহারুল ইসলামের পূর্ণ নাম গাজী বাহারুল ইসলাম এবং পিতার নাম গাজী আবুল কাশেম। তার বাড়িও ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা গ্রামে। তিনিও সরকারি বিএল কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে মাষ্টার্স সম্পন্ন করেছেন।
শরিফুল ইসলাম হিরণ বলেন, ‘মাদক বর্তমান সময়ে আমাদের যুব সমাজকে ধংসের দারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে মাদকমুক্ত দেশ গড়তে। ‘সুস্থ জীবন গড়ি, মাদককে না বলি’ এ শ্লোগানের পাশাপাশি ‘সাইকেল চালান, গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান’ শ্লোগানের ব্যানার নিয়ে রূপসা সেতু থেকে শুরু হয়। তিনি বলেন, ভারতে প্রবেশ করার পর সবাই আমাদের স্বাগত জানিয়েছে। আমাদের সাইকেল চালানো দেখে অনেকে অবাকও হয়েছেন। দুই বাংলার সাইক্লিষ্টকে সেতু বন্ধন আরও দৃঢ় করতে আমাদের এই উদ্যোগ।শরিফুলের আরও একটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে তিনি সাইকেল চালিয়েই বিয়ে করেছেন। বরযাত্রায় যারা গিয়েছিলেন তারাও যান বাইসাইকেলযোগে।
শরিফুল ও বাহারুল বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যপক বনাঞ্চল উজাড় হচ্ছে। নানান কারণে পরিবেশ ও যুবসমাজ আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। অথচ আমরা একটু সচেতন হলেই এই অবস্থার পরিবর্তন করতে পারি। তাদের এ সাইকেল যাত্রার মধ্যদিয়ে দু’দেশের যুব সমাজের মধ্যে কিছুটা পরিবর্তন আনা গেলেই তারা স্বার্থক বলে মনে করছেন।
শরিফুল ইসলাম হিরণ জানান, অ্যাপেক্স বাংলাদেশের সৌজন্যে মাদকবিরোধী সাইকেল প্রচারাভিযানে রূপসা সেতু থেকে শুরু করে যশোরের বেনাপোল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে হাওড়া ব্রিজে গিয়ে প্রচারাভিযান শেষে। আবারও বেনাপোল প্রবেশ করে সাতক্ষীরা দিয়ে খুলনায় যাত্রা শেষ করেন। মাদক বিরোধী শ্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সফরের সার্বিক সহযোগিতা করছে এ্যাপেক্স বাংলাদেশ। যাত্রা বিরতিতে তারা বিভিন্ন স্থানে গাছ লাগাতে লাগেত যান।
প্রসঙ্গত, ‘সুস্থ জীবন গড়ি মাদককে না বলি’- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে শনিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে খুলনার খানজাহান আলী (র.) সেতু (রূপসা সেতু) থেকে খুলনার দুই তরুণ অভিযাত্রী শরিফুল ইসলাম হিরণ ও বাহারুল ইসলাম এ প্রচারাভিযান শুরু করেন। এর আগেও ২০১৪ সালে ঠোঁট কাটা তালু কাটা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই দুই তরুণ বাংলাদেশের ৬৪জেলা বাই-সাইকেলে ভ্রমণ করেছিলেন। শরিফুল ইসলাম হিরণ ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বরযাত্রীসহ সাইকেল চালিয়ে বিয়ে করে আলোড়ন তৈরি করেছিলেন।