অতীতের গোপন কথা কি স্বামীকে জানানো উচিত?
আমাদের বর্তমান সমাজের অবস্থায় এমন অনেক নারী আছেন যারা বিবাহের আগে অন্যের সাথে সম্পর্ক রাখেন। এই সম্পর্ক বিভিন্ন পর্যায়ের হতে পারে। কিন্তু একটা সময়ে তাদের মাঝে আল্লাহপাক দ্বীনের বুঝ দান করার কারণে তারা ভালো হতে চেষ্টা করেন।
এমনকি পারিবারিকভাবে যখন বিবাহের ব্যবস্থা করা হয় তখন তারা ভবিষ্যত স্বামীকে অতীতের সকল অপরাধ সম্পর্কে জানাতে চান। এই চানাতে চাওয়ার বিষয়টা আসলে ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন? ইসলামে এই বিষয়ে কি সমাধান রয়েছে?
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাপাক ইরশাদ করেছন, তোমাকে জিজ্ঞেস করছে, হায়েয সম্পর্কে নির্দেশ কি? বলে দাওঃ সেটি একটি অশুচিকর ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থা। এ সময় স্ত্রীদের থেকে দূরে থাকো এবং তারা পাক-সাফ না হওয়া পর্যন্ত তাদের ধারে কাছেও যেয়ো না। তারপর যখন তারা পাক-পবিত্র হয়ে যায়, তাদের কাছে যাও যেভাবে যাবার জন্য আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাওবা করে ও পবিত্রতা অবলম্বন করে। (বাকারা:২২২)
এই আয়াতে শেষে আল্লাহপাক বলেছেন তিনি তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাওবা করে এবং পবিত্রতা অবলম্বন করে। সুতরাং তাওবা করার কারণ যেহেতু আল্লাহপাক মানুষের গুনাহ মাফ করে দেন সুতরাং সেই বিষয়ে অন্যকে অবগত না করাই ভালো। এবং বিভিন্ন হাদিস থেকে একথাই স্পষ্ট বোঝা যায় যে, গোপন পাপ সম্পর্কে অন্যকে না জানোই শ্রেয়। কেননা এই ধারণের পাপ হচ্ছে হক্কুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর হক। তিনি চাইলেই এই ধরণের পাপের ক্ষেত্রে মানুষকে মাফ করে দিতে পারেন। আর কিয়ামতের দিন আল্লাহপাক হক্কুল্লাহ (আল্লাহর হক) আদায় না করার কারণে যে গুনাহ হয়েছে সেগুলো মাফ করে দেবেন। কিন্তু তিনি হক্কুল ইবাদ ( বান্দার হক) আদায় না করার কারণে যে গুনাহ হয়েছে তা মাফ করবেন না।
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহপাক আরো বলেছেন, আর দেখো, নামাজ কায়েম করো দিনের দু’ প্রান্তে এবং রাতের কিছু অংশ অতিবাহিত হবার পর। আসলে সৎকাজ অসৎকাজকে দূর করে দেয়। এটি একটি স্মারক তাদের জন্য যারা আল্লাহকে স্মরণ রাখে। (হুদ: ১১৪)
অসৎকাজ দূর করার আসল পদ্ধতি হচ্ছে, অনেক বেশী সৎ হয়ে যাওয়া এবং নিজেদের সৎকাজের সাহায্যে অসৎকাজকে পরাস্ত করা। আর মানুষ সৎ হওয়ার সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে নামাজ। কেননা নামাজ আল্লাহর স্মরণকে তরতাজা করতে করে এবং তার শক্তির জোরে অসৎকাজের সংঘবদ্ধ তুফানী শক্তির কেবল মোকাবিলা করাই সম্ভব নয় বরং দুনিয়ায় কার্যত সৎকাজ ও কল্যাণের ব্যবস্থাও প্রতিষ্ঠা করাও সম্ভব।
সুতরাং আপনি তাওবা করতে থাকুন, বেশি বেশি সৎ কাজ করতে থাকুন এবং নামাজ পড়তে থাকুন। আর অতীত পাপের কথা ভুলে থাকার চেষ্টা করুন। আল্লাহপাক মানুষের দোষ গোপন রাখতেই পছন্দ করেন।