বাড়ি বাড়ি ঢুকে সরকারি লোকদের হত্যা করছে…
আফগানিস্তানের গজনি এখন ভুতুড়ে নগরী। শহরটি গত চার দিন ধরে ঘেরাও করে রেখেছে তালেবানরা। মঙ্গলবার পঞ্চম দিনেও হামলা অব্যাহত রেখেছে জঙ্গিরা। একদিকে আফগান সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
শহরের প্রধানসড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি ভবন জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এতে পুরো শহর ধোঁয়ায় ভরে গেছে। বাড়ি বাড়ি ঢুকে সরকারি কর্মকর্তাদের হত্যা করছে। গোটা এলাকায় এখন আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা। বাসিন্দারা সবাই ভীত-সন্ত্রস্ত। যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে।
কাবুল-কান্দাহার মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী একটি বাণিজ্যিক শহর গজনি। ২ লাখ ৮০ হাজার লোকের এ শহর এখন মৃত্যুপুরী। কয়েক মাস ধরেই অধিবাসী-স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা হুশিয়ারি দিয়ে আসছিল, শহর ঘিরে ফেলেছে তালেবানরা। সড়কে সড়কে টহলও দিচ্ছে। তারপর থেকেই ভয়ে ভয়ে গজনি।
শুক্রবার ভোরে অকস্মাৎ হামলা চালায় প্রায় সহস্রাধিক তালেবান। পিছু হটে আগে গভর্নর কার্যালয়, পুলিশ সদর দফতর, গোয়েন্দা কার্যালয় এবং প্রধান কারাগার সামলাতে বাধ্য হয় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। হামলা-পাল্টাহামলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
কাবুল-কান্দাহার মহাসড়কে বাসসহ সব যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের প্রকৃত অবস্থা জানা কঠিন হয়ে পড়েছে। শহরের অধিবাসী সায়েদ জিয়া বলেন, গত পাঁচ দিনে গজনি এক ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা এবং তাদের আত্মীয় স্বজনদের হত্যা করতে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে জঙ্গিরা।
ভয়াবহ এ পরিস্থিতির মধ্যে অধিবাসীরা যে যেদিক পারছেন পালিয়ে যাচ্ছেন। আবদুল্লাহ নামে আরেক বাসিন্দা জানান, কর্মকর্তাদের ধরিয়ে দিতে সহায়তা না করলে সাধারণ নাগরিকদেরও হত্যা করা হচ্ছে। সরকার মৃতের যে হিসাব বলছে, তার থেকেও অনেক অনেক বেশি। তিনি বলেন, আমি লাশবোঝাই দুটি ট্রাক শহরের গোরস্থানের দিকে যেতে দেখেছি।
আফগান কর্মকর্তারা বলছেন, প্রাদেশিক এ রাজধানী শহর সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শহর জঙ্গিমুক্ত করতে মার্কিন বিমানবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। অন্যদিকে শহর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছে জঙ্গিরাও। গজনির সংসদ সদস্য শাহ গুল রেজায়ি মঙ্গলবার এএফপিকে বলেন, শহরের কিছু অংশ জঙ্গিমুক্ত হয়েছে।
তবে অন্যান্য অনেক এলাকায় উঁচু উঁচু ভবনগুলোকে অবস্থান নিয়েছে। সেখান থেকেই তারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর গুলি চালাচ্ছে। এর মধ্যেই রোববার ফারিয়াবের একটি ঘাঁটি দখল করে নেয় তালেবান যোদ্ধারা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গফুর আহমেদ জাইদ জানান, প্রদেশের গরমাক জেলার ওই ঘাঁটিতে তালেবান হামলায় ১৭ জন নিহত এবং কমপক্ষে ১৯ জন আহত হয়েছে্।।