সাতক্ষীরা আশাশুনি বেড়ী বাঁধ ভাঙ্গনরোধের কাজে ব্যাপক অনিয়ম
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের নওয়াপাড়া চন্ডিতলার কাছে পাউবো’র বেড়ী বাঁধ ভাঙ্গনস্থানে কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে কাজ করা হলে ভরা জোয়ারের সময় বাঁধটি ভেঙে বি¯ত্মীর্ণ এলাকা প্লাবনের আশংকা বিরাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২নং পোল্ডারের অধীন চন্ডিতলা স্থানে ৫০/৬০ হাত বেড়ী বাঁধ দীর্ঘ ৭/৮ বছর যাবৎ ভাঙ্গন চলে আসছে। প্রতি বছর বাঁধটি ভাঙ্গনের শিকার হয়। এ পর্যন্ত স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বদান্যতায় বাঁধটি ৩ বার বাঁধা হয়েছে। কর্মসূচির শ্রমিক দিয়েও কাজ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে ব্লুগোল্ডের পক্ষ থেকে মাটির কাজ করা হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী, সাসটেইনেবল ও প্রয়োজনমত কাজ করা হয়নি। ব্লুগোল্ড মাটির কাজ করার পর বাঁধটি নষ্ট না হলেও একমাস আগে বাঁধের উপর অপরিকল্পিত ভাবে মাটি ভর্তি বস্তা চাপান দেওয়ায় প্রতিদিন বাঁধটি ৪/৫ সেন্টিমিটার করে বসতে শুরু করে। বর্তমানে প্রায় আড়াই হাত তিন হাত মত বসে গেছে। ফলে যে কোন সময় জোয়ারের পানিতে বাঁধটি ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে। পলি জমে চর পড়া মাটির উপর মাত্র সাড়ে ৪ মিটার বল্লির সাড়ে ৩ মিটার মাটিতে ঢুকিয়ে এবং আড়াই থেকে ৩ মিটার বাঁশের দেড় বা ২ মিটার মাটিতে পুতে গাইড ওয়াল করা হয়েছে। এই গাইড ওয়াল এর ভিতর দিয়ে ও ওয়াপদার উপরে বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার জন্য ২৯৯০ টি বস্তায় মাটি/বালি ভরা হয়েছে।
কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো বস্তায় মাটি ভরতে নদীর ভিতরের সাইট হতে বেড়ীর স্লোব থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। এর আগেও তারা ওয়াপদার গা ঘেঁষে নদীর চর থেকে মাটি কেটে বেড়ীতে দিয়েছিল। ফলে ওয়াপদার বাঁধ স্থায়িত্ব হারাতে বসেছে। ২০১২-১৩ সালে একই স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গাইড ওয়াল করা হয়েছিল। তখন ১৬/১৮ ফুট করে বাঁশ পুতে গাইড ওয়াল করা হয়েছিল। কিন্তু সে গাইড ওয়াল ও এখন নদী গর্ভে চলে গেছে। সেখানে সাড়ে ৪ মিটার বল্লি ও আড়াই/তিন মিটার বাঁশ পুতে গাইড ওয়াল করা হলে পরিণতি কী হবে তা নিয়ে এলাকাবাসী সন্দিহান হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো বিরাট অংকের ব্যয় বরাদ্দ নিয়ে কাজটি করা হলেও কাজের বাজেট ও কাজের বিবরণ সম্বলিত সাইন বোর্ড প্রদর্শন করা হয়নি ।
স্থানীয় ঘের মালিক আঃ জলিল ঢালি জানান , যে ভাবে কাজ করা হচ্ছে তাতে করে প্রবল পানির তোড়ে বাঁধটি যে কোন সময় ভেঙ্গে যাবে।
এ ব্যাপারে , ব্লুগোল্ড এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুর বারি জানান চার মিটার লম্বা বল্লি ও আড়াই মিটার বাঁশ দেওয়া হয়েছে । আশা করছি এতে কনো সমস্যা থাকার কথা না ।
এব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাফ্ফারা তাসনীন জানান , আমি এলাকাটি পরিদর্শন করেছি । ব্লুগোল্ড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোন লোক কে আমি পাইনি । কাজটি খুব মন্থর গতিতে হচ্ছে ।
এছাড়া আরো জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো-২ ) অপূর্ব কুমার ভৌমিককে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে ।