প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা: কলারোয়ায় ভুল অপারেশনে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু
বিশেপ্রাথমিক তদন্তে কলারোয়ার সোনাবাড়িয়ার সবুজ ক্লিনিকে ভুল অপারেশনে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর সংবাদের সত্যতা মিলেছে। অন্যদিকে ক্লিনিকে চিকিৎসার নামে অসামাজিক কাজসহ নানা প্রকার দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর খবর ফাঁস হয়ে পড়েছে। দৈনিক সাতক্ষীরা অনলাইনে ভুল অপারেশনে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর খবর প্রকাশের পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান তদন্ত শুরু করেন।
গত ১৯ জুলাই সকাল ৮টায় ভর্তির ৩ ঘণ্টা পরে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আসিফ কায়সারকে ডেকে এনে প্রসূতি ফতেমার সিজারিয়ান অপারেশন করানো হয়। কিন্তু ভুল অপারেশনে রক্তক্ষরণে প্রসূতি ফতেমার অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে তাৎক্ষনিক তাকে সাতক্ষীরা এবং পরে খুলনায় নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্টদের তদন্তকালে সরেজমিনে গিয়ে সংবাদকর্মীরা জানাতে পারেন, ক্লিনিক অনুমোদন তো দূরের কথা রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন পর্যন্ত করা হয়নি। ক্লিনিকের কোন সাইন বোর্ডও নেই। সার্বক্ষণিক কোন এমবিবিএস ডাক্তার বা ডিপ্লোমা নার্স নেই। ক্লিনিক মালিক হাতুড়ে নার্স জেসমিনের সিদ্ধান্তে রোগী অপারেশন হয়। আর ফতেমার সিজারিয়ান অপারেশনে কোন এনেসথেসিয়া ডাক্তার উপস্থিত ছিল না।
কলারোয়া হাসপাতালের ডা. মেহেরুল্যাহ জানান, সবুজ ক্লিনিকে অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধ না থাকায় তার পক্ষে হার্নিয়া রোগী অপারেশন করা সম্ভব হয়নি। সিভিল সার্জনের তদন্তকালে দক্ষিণ সোনাবাড়িয়া ওয়ার্ডের মেম্বর নুরুল ইসলাম ‘সবুজ ক্লিনিকের’ মালিক নার্স জেসমিনের অসামাজিক কাজের অভিযোগ তোলেন।
সোনাবাড়িয়ার সায়েদ আলী ও নূর হোসেন জানান, সামনে পর্দা ঢাকা ক্লিনিকে গভীর রাত পর্যন্ত উঠতি বয়সী তরুণ যুবকদের সন্দেহজনক যাতায়াত ছিল। ক্লিনিকে যাতায়াত নিয়ে কয়েকটি পরিবারে কলোহ শুরু হয় বলে তারা জানায়। সম্প্রতি অসামাজিক কার্যকালাপ নিয়ে ঝগড়া ও একে অপরকে মারপিট করে ক্লিনিক মালিক হাতুড়ে নার্স জেসমিন ও অপর নার্স বিবস্ত্র হয়ে পড়ে বলে স্থানীয় চা-দোকানী বাবুল ও আবুল হোসেন জানায়। চিকিৎসার নামে জীবনহানি রোধ এবং তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষায় এলাকাবাসী ক্লিনিকটি বন্ধের দাবি করেছেন। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন জানান, ক্লিনিক তালাবন্ধ করে মালিক পলাতক রয়েছে। অবৈধ সবুজ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।